প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী গাছ সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি

By নিজস্ব সংবাদদাতা, রাবি
16 September 2021, 12:25 PM

রাজশাহীসহ বাংলাদেশের সকল প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী গাছগুলোকে চিহ্নিত করে সেগুলো সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর স্বারকলিপি দিয়েছেন রাজশাহীর ছয় নাগরিক।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় রাজশাহীর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে তারা তিন দফা দাবিসহ একটি স্বারকলিপি প্রদান করেন।

স্বারকলিপিতে তাদের তিন দফা দাবি হলো, রাজশাহীসহ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা সকল প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী বৃক্ষগুলোকে সঠিকভাবে শনাক্ত বা চিহ্নিত করে সেগুলোকে তালিকাভুক্ত করতে হবে, প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী বৃক্ষগুলোকে নিধন নিষিদ্ধ করে সেগুলোকে সংরক্ষণ করতে হবে এবং বৃক্ষনিধন রোধে ও বৃক্ষরোপণের জন্যে সকলকে উদ্বুদ্ধ করতে বৃক্ষরোপনকারীদেরকে পুরস্কার প্রদান এবং বৃক্ষনিধনকারীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

স্বারকলিপি প্রদানকারীরা হলেন, মো. শামীউল আলীম শাওন, ফাতেমা আলী মেঘলা, মো. শাওন ইসলাম, শান্তা ইসলাম, রিনা আক্তার ও মোসা. সুকতারা। স্বারকলিপিতে তারা নিজেদের গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের নাগরিক উল্লেখ করে নিজেদের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর লিখেছেন।

স্বারকলিপিতে তারা বলেন, 'সবুজ, পরিচ্ছন্ন ও নির্মল বায়ুর স্বাস্থ্যকর শহর রাজশাহী। রাজশাহীর সৌন্দর্যের অন্যতম অনুসঙ্গ সবুজ বৃক্ষ আর পাখি। সবুজ ও নান্দনিক এ নগরীতে হাজারও পাখির বসবাস। যার অধিকাংশেরই আবাসস্থল নগরীর বুকে মাথা উচু করে থাকা বিভিন্ন প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী বৃক্ষে। তবে নগরায়ণের বলি হচ্ছে এসব প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী বৃক্ষগুলো। তাই এক রকম যুদ্ধ করেই বেঁচে থাকতে হচ্ছে পাখিদের।'

এছাড়া স্বারকলিপিতে  রাজশাহীতে বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া বৃক্ষ নিধনকে তারা 'পাখি নিধনের উৎসব' বলে উল্লেখ করেছেন।

স্মারকলিপিতে তারা গত ৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে ড্রেন নির্মাণের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভিতরে থাকা অর্জুনসহ প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী বেশকিছু গাছ কেটে ফেলার ঘটনা উল্লেখ করেন, যেখানে শাবকসহ শতাধিক পাখি মারা যায়।

এছাড়া গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর একই জায়গা থেকে প্রায় সাত বছরের বেশি সময় ধরে বসবাস করে আসা পাখি তাড়াতে শতাধিক গাছের ডালপালা কেটে ফেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সর্বশেষ গত বুধবার রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্ধ শতাব্দী পুরোনো গাছ কাটার ঘটনার কথাও স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

তারা স্বারকলিপিতে আরও বলেন, '২০১৬ সালে জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যে বিশ্বের সবচেয়ে দূষণমুক্ত শহর হিসেবে রাজশাহীর নাম উঠে আসে। গাছ কাটার মহোৎসবে সেখানকার পরিবেশে আজকাল নিঃশ্বাস নেওয়াও কষ্টকর হয়ে উঠেছে। শুধু রাজশাহী তথা বরেন্দ্র অঞ্চল নয়, বরং দেশের বিভিন্ন স্থানে চলছে গাছ কাটার মহোৎসব যা কোনোভাবেই কাম্য নয়'।

এছাড়া প্রাণবৈচিত্র্য সুরক্ষায় এখনই এসব প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী গাছ কাটা বন্ধের পাশাপাশি সেগুলোকে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়ার আহবান জানান তারা।