টিসিবির পণ্যের জন্যে ৮ ঘণ্টা অপেক্ষা, খালি হাতে ফিরলেন নিম্ন আয়ের মানুষ

By নিজস্ব সংবাদদাতা, ফরিদপুর
7 July 2021, 15:48 PM

ফরিদপুরে কম দামে টিসিবির পণ্য কেনার আশায় জিলা স্কুলের সামনে মুজিব সড়কের পাশে ভিড় জমিয়েছিলেন নিম্ন আয়ের শতাধিক নারী-পুরুষ। কিন্তু, টিসিবির পণ্য না আসায় আট ঘণ্টা অপেক্ষা করে খালি হাতেই বাড়ি ফিরতে হয় তাদের।

আজ বুধবার সকাল ৮টা থেকে ফরিদপুর শহরের বিভিন্ন মহল্লা থেকে এসে নিম্ন আয়ের এসব মানুষেরা দাঁড়িয়েছিলেন ফরিদপুর জিলা স্কুলের সামনে। টিসিবির পণ্যবাহী গাড়ি না আসায় দীর্ঘ আট ঘণ্টা অপেক্ষার পর বিকেল ৪টার দিকে শূন্য হাতে বাড়ি ফিরে যান তারা।

টিসিবির পণ্য কিনতে আসা মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফরিদপুরে টিসিবির দুই জন ডিলারের মাধ্যমে এসব পণ্য বিক্রি হয়। গতকাল টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হয় জিলা স্কুল ও গোয়ালচামট পাট গবেষণা কেন্দ্রের সামনে। মঙ্গলবার অনেকে এসেও পণ্য পাননি। তাদের বলা হয়েছিল, বুধবার সকাল ৯টার দিকে আসলে পণ্য পাওয়া যাবে।

আজ দুপুর ২টার দিকে  জিলা স্কুলের সামনে কথা হয় আমেনা বেগমের (২৫) সঙ্গে। তিনি টেপাখোলা মহল্লা থেকে তেল, চিনি ও ডাল কিনতে জিলা স্কুলের সামনে আসেন সকাল ৯টার দিকে। কিন্তু, দুপুর ২টার পর্যন্ত গাড়ির দেখা মেলেনি।

ফরিদপুরে টিসিবির পণ্যে প্যাকেজ আকারে দেওয়া হচ্ছে। প্রতি প্যাকেজের মূল্য ৬২০ টাকা। যার মধ্যে রয়েছে চার লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি চিনি ও দুই কেজি মসুর ডাল। বাজারমূল্য থেকে কম দামে পণ্য পাওয়া যায় বলে স্বল্প আয়ের মানুষ টিসিবির পণ্য কিনে থাকেন। ফলে ভিড়ও হয় প্রচুর।

ফরিদপুর সদরের ডিক্রিরচর ইউনিয়নের আয়জদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গি গ্রাম থেকে টিসিবির পণ্য কিনতে এসেছেন গৃহবধূ লাকী বেগম (২২)। তিনি বলেন, ‘বাজার দরের থেকে কম দামে পণ্য কিনতে পাওয়া যায় বলে এসেছি। কিন্তু, এখনো গাড়ির দেখা পাইনি।’

লক্ষ্মীপুর মহল্লার বাসিন্দা নির্মল বাড়ই (৪৮) বলেন, ‘সকাল ১০টা থেকে দাঁড়িয়ে আছি। দুপুর গড়িয়ে এলেও গাড়ির কোনো খোঁজ পাচ্ছি না।’

টেপাখোলা এলাকার বাসিন্দা রিকশাচালক আহাদ শেখ (৩৫) বলেন, ‘গতকাল এসে টিসিবির পণ্য কিনতে পারিনি। আমি আসার আগেই পণ্য শেষ হয়ে গেছে। আমাকে বলা হয়েছে, আজ সকাল ৯টা থেকে জিলা স্কুলের সামনে পণ্য বিক্রি করা হবে। কিন্তু, এখন এসে দেখি গাড়িই আসেনি।’

ফরিদপুর অঞ্চলে টিসিবির প্রধান কার্যালয় মাদারীপুরে। মাদারীপুর টিসিবির সহকারী পরিচালক মো. কামাল হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কোনদিন কোথায় টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হবে, সেই জায়গা নির্ধারণ করে দেয় জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) কিংবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এক্ষেত্রে পরিবেশকদের কিছু করার থাকে না।’

ফরিদপুরে টিসিবির পণ্যের পরিবেশক মো. রাকিব ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গতকাল জিলা স্কুলের সামনে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হয়েছে। আজ বিক্রি করা হয়েছে হেলিপোর্ট মার্কেটের সামনে। এ জায়গা এনডিসি ঠিক করে দিয়েছেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনডিসি আশিক আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আজকে জিলা স্কুলের সামনে পণ্য বিক্রির প্রতিশ্রুতি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। এটা দিয়েছেন ডিলাররা। আরেকটি বিষয় হচ্ছে প্রতিদিন জেলায় দুই জন ডিলার টিসিবির পণ্য বিক্রি করে থাকেন। আজ একজন বিক্রি করায় এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। আগামীকাল থেকে দুইটা ডিলারই টিসিবির পণ্য বিক্রি করবেন। ফলে আর কোনো ঝামেলা হবে না বলে আশা করছি।’