সাংকেতিক ভাষারও আছে আঞ্চলিকতা

By বিলিভ ইন অর নট
26 April 2022, 13:39 PM
UPDATED 9 May 2022, 20:01 PM

১৬০০ দশকের শেষ দিকে জোনাথান ল্যামবার্ট নামে ইংল্যান্ডের কেন্ট শহরের এক বাসিন্দা আসেন মার্থার ভাইনইয়ার্ডের পশ্চিম প্রান্তের চিলমার্ক শহরে। তিনি ছিলেন বধির, তার সন্তানরাও তার মতোই বধির ছিলেন। তারা হয়ে পড়ের ওই দ্বীপের প্রথম বধির বাসিন্দা। এরপর থেকেই গল্পের শুরু। 

চিলমার্ক শহরটি ছিল মার্থার ভাইনইয়ার্ডের নির্জন অঞ্চল। যেখানে কোনো বন্দর ছিল না। পর্যটকদের আনাগোনাও ছিল না খুব একটা। সময়ের পরিক্রমায় ল্যামবার্ট পরিবারের বংশগত বৈশিষ্ট্য চিলমার্ক শহরে ছড়িয়ে পড়ল। সেখানে প্রতি ২৫ জন বাসিন্দার মধ্যে একজন বধির হতে লাগলেন।

কেন্ট শহরের ঐতিহ্য থেকে ল্যামবার্ট আয়ত্ত করেছিলেন সাংকেতিক ভাষা। সেই ঐতিহ্য তিনি সঙ্গে করে নিয়ে যান চিলমার্ক শহরে। যেখানে মানুষের যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে উঠে এটি। আর চিলমার্ক পরিণত হয় এক বিখ্যাত অঞ্চলে। 

সেখানকার প্রবীণরা তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে সাংকেতিক ভাষার দীক্ষা দিয়ে গেছেন। তবে আফসোসের বিষয়, সাংকেতিক ভাষার উৎস হিসেবে মার্থার ভাইনইয়ার্ডের কোনো রেকর্ড পাওয়া যায়নি। আর এই ভাষার জন্য পরিচিত সবশেষ ব্যক্তিটিও মৃত্যুবরণ করেন ১৯৫২ সালে। এখনো সেখানে গেলে হয়তো কিছু সংখ্যক নীরব ভাষার মানুষ পাওয়া যেতে পারে। তবে, মার্থার ভাইনইয়ার্ডের সাংকেতিক ভাষাই যুক্তরাষ্ট্রের সাংকেতিক ভাষার উদ্ভাবক। 

১৮১৭ সালে কানেকটিকাটের হার্টফোর্ডে আমেরিকান স্কুল ফর দ্য ডেফ প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা কাজ করেন বধিরদের কল্যাণে। শিক্ষার্থী ও বিশেষজ্ঞরা মিলে এক ধরনের সাংকেতিক ভাষা তৈরি করেন।
 
কিছু মানুষ ভাইনইয়ার্ডের ভাষা জানতেন অথবা কাছাকাছি ধরনের সংকেত ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতেন। অনেকে আবার ফ্রান্সের সাংকেতি ভাষা ব্যবহার করতেন। সবগুলো ভাষার সমন্বয়ে আমেরিকার অফিসিয়াল সাংকেতিক ভাষা তৈরি করা হয়। 

তবে, মজার বিষয় হলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আঞ্চলিক ভাষার মতো সাংকেতিক ভাষারও আঞ্চলিকতা আছে।

 

রিপলি'স বিলিভ ইট অর নট থেকে অনুবাদ করেছেন আসরিফা সুলতানা রিয়া