২০২০ সালে সমুদ্রে অন্তত ২১৪ রোহিঙ্গার মৃত্যু: ইউএনএইচসিআর
জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য ও বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে আশ্রয় খুঁজতে যাওয়ার পথে অন্তত ২১8 রোহিঙ্গা মারা গেছেন অথবা সমুদ্রে নিখোঁজ হয়েছেন।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, তারা সেই দুই হাজার ৪১৩ জন রোহিঙ্গার একটি অংশ, যারা গত বছর ভ্রমণ করেছিলেন। ২০১৫ সাল থেকে বঙ্গোপসাগর ও আন্দামান সাগর অঞ্চলে নৌকায় করে পাড়ি দেওয়া শুরু হওয়ার পর থেকে নৌপথে ভ্রমণের জন্য এটি ছিল সবচেয়ে ভয়াবহতম বছর।
'সমুদ্রে ভাসমান: আন্দামান ও বঙ্গোপসাগরে শরণার্থীদের বিপজ্জনক যাত্রা' শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, '২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালের নৌযাত্রা ছিল আট গুণ ভয়াবহ।'
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, 'প্রথম দিকে এই বিপজ্জনক যাত্রায় অধিকাংশ যাত্রীই পুরুষ যাত্রী থাকলেও বর্তমানে প্রায় দুই তৃতীয়াংশ নারী ও শিশু যাত্রী রয়েছেন।
ইউএনএইচসিআর বলেছে, রোহিঙ্গাদের এই ধরনের প্রাণঘাতী যাত্রা কোনো নতুন ঘটনা নয়। গত এক দশকে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য ও কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির থেকে সাগর পথে চলে গেছে।
'এই বিপজ্জনক যাত্রার শিকড় খুঁজে পাওয়া যায় মিয়ানমারে, যেখানে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নিয়ে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।'
বাংলাদেশ প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার আশ্রয় দিয়েছে। ২০১৭ সালে নৃশংস সামরিক অভিযান শুরু হলে যাদের বেশির ভাগই মিয়ানমার ছেড়ে পালিয়েছিল। এছাড়া রাখাইন রাজ্যে এখনো প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা রয়েছেন।
যেসব রোহিঙ্গা প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় পেয়েছেন, তাদের চলাচল, জীবিকা এবং শিক্ষার ওপর বিধিনিষেধের কারণে তারা অন্য অঞ্চলে ভবিষ্যৎ খুঁজতে বাধ্য হচ্ছে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা জানিয়েছে, এছাড়া পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পুনর্মিলনের আশাসহ বিভিন্ন কারণে তারা অন্যত্র যাত্রা করছে।
এই ধরনের যাত্রা করার সময় তারা চোরাকারবারিদের মাধ্যমে অপব্যবহারের বড় ধরনের ঝুঁকিতে থাকেন। তাদের ওই বিপজ্জনক যাত্রা শেষ করার জন্য কোথাও নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে না পাওয়ার কারণে তাদের দুঃসাধ্য যাত্রা আরও বেশি কঠোর হয়ে পড়ে।