পর্তুগালে দক্ষিণ এশীয় চলচ্চিত্রমেলায় বাংলাদেশের ছবি, তারেক মাসুদকে উৎসর্গ
আটলান্টিক পূর্ব পাড়ে পশ্চিম ইউরোপের দেশ পর্তুগালে প্রথমবারের মত আয়োজন করা হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার চলচ্চিত্রমেলা “মোশত্রা দে সিনেমা সুল আসিয়াতিকো-সিনেমেলা”। ইউরোপে দক্ষিণ এশিয়ার চলচ্চিত্রকে তুলে ধরা, দক্ষিণ এশীয় প্রবাসীদের স্বদেশের সিনেমা দেখার সুযোগ প্রদান এবং ইউরোপ ও এশিয়ার মাঝে চলচ্চিত্র শিল্পের সেতু নির্মাণ করতে এ আয়োজন করছে পর্তুগালে অবস্থিত আন্তর্জাতিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম প্রোডাকশন কোম্পানি “ভিলা দু সিনেমা”।
পর্তুগালের রাজধানী লিসবনের প্রখ্যাত সিনেমা হল সাঁও জর্জ এ ৩০ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত তিনদিনের এ চলচ্চিত্রমেলা উৎসর্গ করা হয়েছে বাংলাদেশের বরেণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রয়াত তারেক মাসুদের স্মৃতির প্রতি। এতে বাংলাদেশের ছয়টি এবং ভারত-পাকিস্তান যৌথ প্রযোজিত একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, স্পেন-বাংলাদেশের একটি, নেপালের দুটি, ভুটানের একটি ও বাংলাদেশের পাঁচটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।
এবারের সিনেমেলায় প্রদর্শিত হবে বাংলাদেশের মোরশেদুল ইসলামের চলচ্চিত্র “চাকা”, অমিতাভ রেজার “আয়নাবাজি”, আবু শাহেদ ইমনের “জালালের গল্প”, তৌকির আহমেদের “অজ্ঞাতনামা”, মেহের আফরোজ শাওনের “কৃষ্ণপক্ষ” ও তারেক মাসুদের চলচ্চিত্র “রানওয়ে”।
এছাড়াও, ভারত-পাকিস্তান যৌথ প্রযোজিত মাহিন জিয়া ও মিরিয়াম চণ্ডির ছবি “লেয়ারি নোটস” এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র স্পেনের বাংলা কমিউনিটি নিয়ে নির্মিত পারমিতা ধরের “ইন বিটুইন” ভুটানের অরুণ ভট্টরায় এর “টিনটিন ইন ভুটান”, নেপালের সুজিত বিদারীর “সাবিত্রী” ও কালা সাংরুলার “ভুতা জামা”, ভারতের দেবাশিস মাখিজার “ডোন্ট ক্রাই ফর রাহিম লে কক” এবং বাংলাদেশের নুরুজ্জামান খানের “ম্যান উইথ নো নেম”, রাজিব আহসানের “পাপেট”, রহমান মনির “সি ইউ এগেইন”, আবিদ মল্লিকের “পথ”, ও পারভেজ রাজনের “তারেক মাসুদ”।
পর্তুগাল-বাংলাদেশের পাঁচশ বছরের সম্পর্ক এবং লিসবন প্রবাসী বাংলা ভাষা-ভাষী জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করে প্রথম পর্বে থাকছে বাংলাদেশের সিনেমা এবং এটি তারেক মাসুদকে উৎসর্গ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানটি প্রতিবছর দক্ষিণ এশিয়ার একেকটি দেশকে প্রতিনিধিত্ব করবে।
পর্তুগালের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় লুসোফুনা ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ দূতাবাস, লিসবন, জুন্তা ফ্রেগজিয়া আরইয়ুস, লিসিও কামুয়েস, গবেষণা সংস্থা সিআরআইএ, এজিয়াক-সিনেমা সাঁও জর্জ, ক্যামেরা মিউনিসিপাল লিসবন ও অদিভেলাস, বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকার মারতিম মনিজের স্পাইসি রেস্টুরেন্ট এবং এসোসিয়েসাঁও সুপ্রেসাওর সার্বিক সহযোগিতায় এ চলচ্চিত্রমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
“মোশত্রা দে সিনেমা সুল আসিয়াতিকো-সিনেমেলা”র প্রডাকশন ডিরেক্টর আনা পাউলা মারভাউ জানান, “দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর চলচ্চিত্র নিয়ে পর্তুগালে প্রথমবারের মতো এই সিনেমেলার আয়োজন এশীয় কমিউনিটি ও ইউরোপীয় দর্শকদের জন্য অনেক বড় সুযোগ। প্রথমবার বাংলাদেশকে উৎসর্গ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যদেশগুলোর সিনেমাকে আমরা ফোকাস করব।”
ইউরোপ এবং এশিয়ার মাঝে চলচ্চিত্র সেতু নির্মাণ করতে “ভিলা দু সিনেমা” কাজ করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এছাড়াও, এশীয় দেশগুলোর সঙ্গে সিনেমার কো-প্রোডাকশন, পোস্ট প্রোডাকশন ও ইউরোপে শুটিং লোকেশনের ব্যবস্থা করছে এই প্রতিষ্ঠানটি।