উৎপাদক নয়, জীবনরক্ষাকারী ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করবে সরকার: হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়

By স্টার অনলাইন রিপোর্ট
24 November 2025, 14:52 PM
UPDATED 24 November 2025, 21:02 PM

ওষুধের দাম নির্ধারণ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। রায়ে বলা হয়েছে, ওষুধ ও কসমেটিকস আইন ২০২৩ অনুযায়ী, সব জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম নির্ধারণ করবে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ, উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো নয়। একইসঙ্গে জীবনরক্ষাকারী ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ওষুধ, যার মধ্যে আজীবন ব্যবহারের ওষুধও রয়েছে—এসবের তালিকা প্রণয়ন ও দাম নির্ধারণে স্পষ্ট নীতিমালা তৈরির জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

'ওষুধের দাম নির্ধারণ করা উৎপাদনকারীদের কোনো বিশেষ সুবিধা নয়, কারণ ওষুধ বিলাসবহুল পণ্য নয় বা অন্য কোনো পণ্যের মতো নয়—যার ব্যবহার জরুরি নাও হতে পারে, কিংবা যার ক্রয় ভোক্তার সামর্থ্য বা প্রয়োজন অনুযায়ী এড়ানো, পিছিয়ে দেওয়া বা কমিয়ে আনা সম্ভব', আজ সোমবার প্রকাশিত ২৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ মন্তব্য করেন বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। 

এর আগে গত ২৫ আগস্ট মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) ২০১৮ সালে করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেন।

রিট আবেদনকারীপক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ১৯৮২ সালের দ্য ড্রাগস (নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সরকার ১৯৯৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ৭৩৯টি ওষুধের দাম নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করে। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১৯৯৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি একটি সার্কুলারে মাত্র ১১৭টি ওষুধের দাম নির্ধারণ করে। সেখানে বলা হয়, অন্যান্য ওষুধের দাম নির্ধারণ করবে উৎপাদনকারী কোম্পানি।

তিনি বলেন, এইচআরপিবি রিটে ওই সার্কুলারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে। হাইকোর্ট রায়ে সার্কুলারটিকে অবৈধ ঘোষণা করে।

মনজিল মোরসেদ বলেন, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও কিডনি সমস্যার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ সংশ্লিষ্ট আইনে জীবনরক্ষাকারী ওষুধ হিসেবে গণ্য এবং হাইকোর্টের রায়ের ফলে ওষুধের দাম নির্ধারণ করবে সরকার, উৎপাদনকারী কোম্পানি নয়।

তিনি আরও বলেন, ওষুধ মানুষের জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বেঁচে থাকার অন্যতম উপায়। এর দাম বৃদ্ধির সঙ্গে নাগরিকদের জীবনের অধিকারের সম্পর্ক রয়েছে। এই কারণে ওষুধের দাম নির্ধারণে সরকারের ক্ষমতা সীমিত করার সিদ্ধান্ত ও জারি করা সার্কুলার নাগরিকের অধিকার খর্ব করে।