১৯ বছর সুদানে আটকে থাকা ময়নুল অবশেষে দেশে ফিরলেন
গত প্রায় দুই দশক ধরে যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানে আটকা পড়েছিলেন বাংলাদেশি নাগরিক মোহাম্মদ ময়নুল হক। অবশেষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় দেশে ফিরেছেন তিনি।
আজ রোববার দক্ষিণ সুদান থেকে তাকে বহনকারী উড়োজাহাজটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ২০০৬ সালে ঠিকাদারি কাজে সুদানের রাজধানী খার্তুমে যান ময়নুল। কিন্তু সেখানে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে তিনি আটকা পড়েন।
নিরাপদ জায়গা খুঁজতে খুঁজতে তিনি খার্তুম থেকে আবিয়েই অঞ্চলে পালিয়ে যান। কিন্তু সে সময় নিজের পাসপোর্টসহ সব ধরনের গুরুত্বপূর্ণ নথি হারিয়ে ফেলেন ময়নুল। এতে তার দেশে ফেরার সব পথ বন্ধ হয়ে যায়।
২০২৫ সালের মে মাসে জাতিসংঘের অধীনে পরিচালিত ইউনাইটেড নেশনস ইন্টেরিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবিয়েই (ইউএনআইএসএফএ)-এ নিয়োজিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি টহল দল তাকে খুঁজে পায়।
আশার আলো দেখতে পেয়ে ময়নুল বাংলাদেশি সেনাদের কাছে তাকে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করার আবেদন জানান। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর সেনাবাহিনী বাংলাদেশে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং সেনা সদরের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে তার প্রত্যাবর্তনের অনুরোধ জানায়।
এই অনুরোধটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। পরে তা সমন্বয় করে ইথিওপিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস। ২০২৫ সালের ১৫ আগস্ট দূতাবাস তাকে দেশে ফেরানোর জন্য একটি ট্রাভেল পারমিট দেয়। আর্থিক সক্ষমতা না থাকায় দূতাবাস তার ফ্লাইটের টিকিট এবং অন্যান্য সহায়তার ব্যবস্থাও করে।
২০২৫ সালের ২৯ অক্টোবর সেনা তত্ত্বাবধানে ময়নুলকে আবিয়েই থেকে দক্ষিণ সুদানের রাজধানী জুবা নেওয়া হয়। সেখান থেকে ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় পাঠানো হয়।
ময়নুল দেশে ফেরার পর তার পরিবারে আনন্দের সীমা নেই। দেশে ফিরতে সাহায্য করায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দূতাবাসের কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন ময়নুল।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এ ধরনের মানবিক অভিযানে ভূমিকা রাখতে পেরে তারা গর্বিত এবং সংকটকালে বাংলাদেশের নাগরিকদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিও পুনর্ব্যক্ত করেছে।