অ্যান্ড্রয়েডকে হাস্যকর ভেবেছিল স্যামসাং

আহমেদ হিমেল
2 February 2023, 06:20 AM

অ্যাপল তাদের আইফোন ও অ্যাপস্টোরের ঘোষণা দিয়ে ২০০৭ সালের ২৯ জুন স্মার্টফোনের দুনিয়া চিরদিনের জন্য বদলে দেয়। এর ১ বছর পর ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম উন্মোচন করা হয়।

অনেকেই ভেবেছিল অ্যাপস্টোরের জন্য অ্যান্ড্রয়েড ভালো বিকল্প। এই ধারণা সত্যি হয়েছে। অ্যান্ড্রয়েড খুব ভালোভাবে দ্রুতই বিকল্প বাজার দখল করে নিতে পেরেছিল।

উইন্ডোজ যেভাবে ডেস্কটপ কম্পিউটারের জগৎ শাসন করছিল, অ্যান্ড্রয়েডও সেভাবে স্মার্টফোনের জগতে শক্তিশালী প্রভাব বিস্তার করতে চেয়েছিল। বলার অপেক্ষা রাখে না, বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ৮০ শতাংশ স্মার্টফোন অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে চলে।

কিন্তু অ্যান্ড্রয়েড ও স্যামসাংয়ের মধ্যে এমন একটি ইতিহাস আছে যা তারা আর মনে করতে চাইবে না।

ঘটনাটি ঘটেছিল ২০০৪ সালে। তখন স্মার্টফোনের যুগ ছিল না। মাত্র ৮ জনের একটি দল অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমটি তৈরি করছিল। তখনও বিশ্বের অন্যতম বড় মোবাইল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান স্যামসাং। অ্যান্ড্রয়েড দলটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সাউলে যায় স্যামসাংয়ের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলতে।

অ্যান্ড্রয়েড দলের প্রধান অ্যান্ডি রুবিন স্যামসাংয়ের শীর্ষ ২০ জন কর্মকর্তাকে এই অপারেটিং সিস্টেমের গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার কথা বোঝানোর চেষ্টা করেন। স্যামসাংয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা তখন অ্যান্ডি রুবিনকে বলেছিলেন, 'এটা তো হাস্যকর। আপনি আর আপনার দলের ৬ জন মিলে এটা বানাবেন? আপনি কি উন্মাদ?'

কিন্তু, এর মাত্র কয়েক সপ্তাহ পর গুগল অ্যান্ড্রয়েডকে ৫০ মিলিয়ন ডলারে কিনে নেয় এবং অ্যান্ডি রুবিন হয়ে যান গুগলের মোবাইল ও ডিজিটাল কনটেন্ট বিভাগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট। এরপরই স্যামসাং কর্মকর্তারা নিজেদের ভুল বুঝতে পারেন। তারা একটি আকর্ষণীয় ব্যবসায়িক চুক্তি নিয়ে কথা বলার জন্য রুবিনকে সরাসরি দেখা করার আনুরোধ করেন। কিন্তু, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে।

অনেকেই মনে করেন, স্যামসাংয়ের ওই কর্তারা এমনটা না করলে অ্যান্ড্রয়েড স্যামসাংয়ের মালিকানায় থাকতো। এটা সত্যি।

তবে গুগল অ্যান্ড্রয়েডের মালিকানা নেওয়ার পর এবং অ্যান্ড্রয়েডের ব্যাপক উত্থানে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে স্যামসাংই। প্রতিষ্ঠানটির স্মার্টফোনগুলো অ্যান্ড্রয়েডে চলে এবং তারা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ স্মার্টফোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান।

স্যামসাং এখনো তাদের নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।