‘কৌতুক চরিত্রকে অবশ্যই গুরুত্ব দিই, কিন্তু আমার চরিত্র তো সেটা নয়’

শাহ আলম সাজু
শাহ আলম সাজু
22 November 2019, 14:01 PM
UPDATED 22 November 2019, 20:07 PM

মোশাররফ করিমের জনপ্রিয়তা গ্রাম-শহর সর্বত্র। ছেলে-বুড়ো সবার কাছে জনপ্রিয় অভিনেতা তিনি। টিভি নাটকে এই সময়ে তার মতো জনপ্রিয় ও ব্যস্ত শিল্পী কমই আছেন। শুরুটা করেছিলেন মঞ্চ দিয়ে। নাট্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তিনি। সম্প্রতি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারকে কেন্দ্র করেও তিনি আলোচনায় এসেছেন। তার সঙ্গে কথা হয় দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনের।

ব্যস্ত অভিনেতা আপনি, অভিনয়ের ফাঁকে কোনো কিছু মিস করেন?

অবশ্যই মিস করি। বেইলি রোডের আড্ডা খুব মিস করি। আমি তো থিয়েটার করা মানুষ। থিয়েটারের প্রচুর বন্ধু আছে আমার। সেই সব বন্ধুদের নিয়ে বছরের পর বছর ধরে বেইলি রোডে একটা সময় আড্ডা দিয়েছি। ব্যস্ততার কারণে সেই আড্ডাটা আর নেই। কিন্তু সেটাকে মিস করি। কাজ করতে করতে মনে হয়, আবার যদি আড্ডা দিতে পারতাম আগের মতো।

নাটক বা সিনেমায় হিরো বিষয়টি আছে, আপনি কি হিরোইজম বিষয়টি মানেন?

আমি হিরোইজমে বিশ্বাস করি না। একজন শিল্পীর কাজ অভিনয় করা। তিনি যেকোনো চরিত্রে অভিনয় করতে পারেন। অভিনয়টাই তো আসল। সেখানে হিরোইজম কোনো বিষয় নয়। তাহলে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কুবেরকে আপনি কি বলবেন? এজন্য আমি কখনও এটা বিশ্বাস করি না।

ভারতীয় বাংলা সিনেমায় প্রথমবার অভিনয় করার কথা শোনা গিয়েছিলো, কাজটি কবে নাগাদ শুরু হচ্ছে?

ভারতীয় বাংলা সিনেমা করার ব্যাপার এখনও চূড়ান্ত না। তারা আসবে। তাদের সঙ্গে বসবো। গল্প ও চরিত্র নিয়ে কথা হবে। সবকিছু যদি মনের মতো হয়, তবেই ভারতীয় বাংলা সিনেমাটি করবো। আগে সবকিছু মিলতে হবে। তা ছাড়া নয়।

সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নিয়ে দেশজুড়ে একটি আলোচনা হয়ে গেছে, যেখানে আপনি ছিলেন মুল কেন্দ্রবিন্দুতে?

বিষয়টি নিয়ে যা বলবার তা আগেই বলে দিয়েছি। আমার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েই লিখেছি। আমার কিন্তু কারও প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। আমার প্রশ্ন হচ্ছে- আমার অভিনীত চরিত্রটি কৌতুক চরিত্রের ছিলো না। কৌতুক চরিত্রকে অবশ্যই গুরুত্ব দিই, কিন্তু আমার চরিত্র তো সেটা নয়। যারা জুরি বোর্ডে থাকেন, তাদের এই বিষয়গুলির প্রতি যত্ন দেওয়া দরকার।

হালদা, টেলিভিশন, থার্ড পারসন সিংগুলার নম্বরসহ বেশ কিছু সিনেমা করে আপনি দেশে বেশ সাড়া পেয়েছেন, নতুন কোনো সিনেমায় শিগগিরই দেখা যাবে কী?

কথা হচ্ছে নতুন সিনেমা নিয়ে। হয়তো হবে, হয়তো হবে না। হওয়ার ব্যাপারে আমি আশাবাদী। তবে এখনও আলোচনার মধ্যে আছে। নতুন সিনেমা করলে সবাই জানতে পারবেন।

থিয়েটার থেকে টিভি নাটক, তারপর সিনেমা, অভিনয়ের প্রতি ঝোঁকটা কবে থেকে ছিলো?

অভিনয়ের ব্যাপারটি ছোটবেলা থেকেই আমার ভেতরে ছিলো। সেটা অন্যভাবে। মানুষকে হুবহু কপি করার বিষয়টা আমি পারতাম। করতামও। তাছাড়া স্কুলে নাটক হলে আমি অবশ্যই থাকতাম। ওটাই হয়ত জীবনের মধ্যে গেঁথে গেছে।

প্রচুর টিভি নাটক হচ্ছে, এতো নাটক নিয়ে কী মনে হয় আপনার?

আমাদের টিভি নাটক অনেকদূর এগিয়েছে। এটা স্বীকার করতেই হবে। তবে হ্যাঁ, ভালো নাটকের পাশাপাশি কিছু মন্দ নাটকও হচ্ছে। তারপরও বলবো- আমরা ভালো কিছু পরিচালক পেয়েছি। ভালো কিছু অভিনেতা পেয়েছি। ভালো কিছু ক্যামেরাম্যান পেয়েছি। ভালোর কিন্তু শেষ নেই। তবে, দিন শেষে ভালোটাই মানুষ  গ্রহণ করবে।

অভিনয় নিয়ে এতো ব্যস্ত থাকেন, কষ্ট লাগে না?

মাঝে মাঝে একটু কষ্ট লাগে। তবে এটাও ভাবি, শিল্পীর কাজই তো অভিনয় করা। অভিনেতা বলেই তো কাজটি করি। শিল্পীর ভেতরে যদি অভিনয়ের প্রেমটা থাকে, তাহলে কম বা বেশি এই ব্যাপারটি কোনো সমস্যা নয়। অভিনয়ের প্রতি প্রেমটাই আসল। তাহলেই কাজটি সহজ হয়ে যায়।