সিনেমার ‘নবাব’ আনোয়ার হোসেনের কথা কি মনে পড়ে?

জাহিদ আকবর
জাহিদ আকবর
13 September 2020, 11:57 AM
UPDATED 13 September 2020, 18:01 PM

বাংলা সিনেমার নন্দিত অভিনেতার নাম আনোয়ার হোসেন। রুপালী পর্দায় নবাব সিরাজউদ্দৌলা হিসেবে খ্যাত তার নাম। ২০১৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর এইদিনে মৃত্যুবরণ করেন বাংলা সিনেমার এই নবাব। মাত্র সাত বছরে অনেকেই ভুলেছি তার কথা। খুব বেশি উচ্চারিত হয় না কোথাও তার নাম। সেই কিংবদন্তি অভিনেতাকে নিয়ে এই আয়োজন।

আনোয়ার হোসেনের কথা স্মরণ করে অভিনেত্রী ববিতা দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে বলেন, ‘মনেপ্রাণে সত্যিকারের শিল্পী মানুষ ছিলেন আনু ভাই (আনোয়ার হোসেন)। সিনেমায় তিনি অভিনয় করতেন অভিনয়কে ভালোবেসেই। সুভাষ দত্ত পরিচালিত “অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী” ছবিতে তার নায়িকা ছিলাম। এ ছাড়া “গোলাপী এখন ট্রেনে”, “নয়নমনি”, “লাঠিয়াল”, “সূর্যগ্রহণ”সহ অনেক ছবিতে অভিনয় করেছি আমরা।’

সংগীতশিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী আনোয়ার হোসেন স্মরণে দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে বলেন, ‘ভালো সম্পর্ক ছিল আমাদের মাঝে। আমজাদ হোসেন পরিচালিত “গোলাপী এখন ট্রেনে” ছবির “আছেন আমার মোক্তার” গানটির সঙ্গে তার অসামান্য অভিনয় দর্শকদের মাঝে আলাদা আবেদন তৈরি করেছিল। এই গানে তার অভিনয়ে সত্যি অন্য এক ব্যাপার ঘটে। তার অভিনয় পর্দায় অন্যরকম মাত্রা যোগ করতো। “আছেন আমার মোক্তার” গানটির জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলাম।’

আনোয়ার হোসেন ২০১০ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা পান। ১৯৭৫ সালে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী অভিনেতা তিনি। নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত ‘লাঠিয়াল’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য তাকে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার দেওয়া হয়। এরপর আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ছবিতে সহ-অভিনেতার পুরস্কার পান ১৯৭৮ সালে।

আনোয়ার হোসেন ১৯৩১ সালের ৬ নভেম্বর জামালপুর জেলার সরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। স্কুলজীবনে প্রথম অভিনয় করেন আসকার ইবনে সাইকের ‘পদক্ষেপ’ নাটকে। ১৯৫৭ সালে তিনি ঢাকায় চলে আসেন এবং নাসিমা খানমকে বিয়ে করেন।

অভিনয় জীবনের ৫১ বছরে প্রায় পাঁচ শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। ২০০৭ সাল পর্যন্ত অভিনয় করেছেন আনোয়ার হোসেন। ১৯৫৮ সালে ‘তোমার আমার’ সিনেমার মাধ্যমেই অভিনয়ের সূচনা। ১৯৬৪ সালের ১ মে তার অভিনীত ‘দুই দিগন্ত’ ছবি দিয়ে ঢাকার ‘বলাকা’ সিনেমা হলের উদ্বোধন হয়েছিল।

তার অভিনীত অন্যতম ছবিগুলোর মধ্যে মধ্যে রয়েছে- জহির রায়হান পরিচালিত ‘কাঁচের দেয়াল’ ও ‘জীবন থেকে নেয়া’, মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘তোমার আমার’ ও  ‘সূর্যস্নান’, কাজী জহির পরিচালিত ‘বন্ধন’, খান আতাউর রহমান পরিচালিত ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’, এম এ হামিদ পরিচালিত ‘অপরাজেয়’, সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’, জহিরুল হক পরিচালিত ‘রংবাজ’, আলমগীর কবির পরিচালিত ‘ধীরে বহে মেঘনা’, নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত ‘লাঠিয়াল’, আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘নয়নমনি’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ও ‘ভাত দে’।