নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ি এখন মাদকের আস্তানা

এস দিলীপ রায়
এস দিলীপ রায়
19 April 2021, 08:16 AM
UPDATED 19 April 2021, 14:23 PM

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নে ঐতিহ্যবাহী জমিদার বাড়ির পরিত্যক্ত ভবন পরিণত হয়েছে মাদক বিক্রি ও সেবনের নিরাপদ আস্তানায়।

বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদক সেবনকারীরা এখানে ছুটে আসেন। বিকাল থেকে শুরু হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত জমিদার বাড়ির পরিত্যক্ত ভবনে আনাগোনা থাকে মাদক চোরাকারবারি ও সেবনকারীদের।

মাদক চোরাকারবারি ও সেবনকারীদের ভয়ে স্থানীয়া মুখ খোলার সাহস করেন না। স্থানীয় প্রশাসনও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।

মাদকের আখড়া হয়ে ওঠায় ঐতিহ্যবাহী এই জমিদার বাড়ির পরিবেশ নষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় একটি স্কুলের শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মাদক চোরাকারবার ও সেবনের সঙ্গে জড়িত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে প্রভাবশালীরা। পুলিশ জমিদার বাড়ির পরিত্যক্ত ভবনে মাদকদ্রব্য বিক্রি ও সেবনের ব্যাপারে জানে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি ও সেবনের কারণে এখানে পরিবার নিয়ে বাস করাই কঠিন হয়ে পড়েছে।’

নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুসাব্বের আলী মুসা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘পুলিশকে একাধিকবার জানিয়েছি। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এই ঐতিহাসিক স্থাপনা দেখতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিদিন মানুষ বেড়াতে আসেন। জমিদার বাড়ির পরিত্যক্ত ভবনের চারপাশে ছড়িয়ে রয়েছে ফেন্সিডিলের বোতল। এসব দেখে বেড়াতে আসা মানুষের মনে খারাপ ধারনা সৃষ্টি হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাদক চোরাকারবারি ও সেবনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে স্থানীয়ভাবে নানা জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে। তাই এ বিষয়ে পুলিশের ব্যবস্থা নিতে হবে।’

কুড়িগ্রাম মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (এডি) আবু জাফর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে অবগত না। তবে এটা জানি কুড়িগ্রামের পুলবাড়ী, নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী, রাজীবপুর ও রৌমারীতে মাদকের ভয়াল থাবা রয়েছে। আমাদের প্রয়োজনীয় যানবাহন নেই, কর্মী নেই। তাই সবসময় সব জায়গায় অভিযান চালাতে পারি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ি ঘুরে শিগগির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজীব কুমার রায় দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘পুরো ফুলবাড়ী উপজেলাতেই মাদক সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ির পরিত্যক্ত ভবনে মাদক বিক্রি ও সেবন বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করব।’