থাই-কম্বোডিয়া সীমান্ত সংঘাতে ১৫০ জনের বেশি বাংলাদেশি অভিবাসী বাস্তুচ্যুত
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে দুই সপ্তাহ ধরে চলমান সংঘাতে ১৫০ জনের বেশি বাংলাদেশি অভিবাসী বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
কম্বোডিয়ার একটি অভিবাসন কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া কয়েকজন বাংলাদেশি অভিবাসী দ্য ডেইলি স্টারকে এ খবর নিশ্চিত করেন।
ময়মনসিংহের বাসিন্দা ৩৭ বছর বয়সী রঞ্জু মিয়া বলেন, 'থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তের কাছে একটি স্থাপনার নির্মাণ কাজ করছিলাম আমরা। গত ৯ ডিসেম্বর ওই জায়গার একটি অংশ বোমা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। পালিয়ে যাওয়ার সময় পথে কম্বোডিয়ার ইমিগ্রেশন পুলিশ আমাদের আটক করে অভিবাসন কেন্দ্রে নিয়ে যায়।'
রঞ্জু মিয়া ও তার সহকর্মীরা দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে সীমান্তে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করছিলেন।
রঞ্জু মিয়া আরও জানান, ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদের ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট পরীক্ষা করে দেখেছে। পাসপোর্ট পরীক্ষার পর ৫০ জনকে ছেড়ে দেয় তারা।
তবে বাকিরা এখনো আটক বলে জানান তিনি।
আরেক অভিবাসী জোবায়ের আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন,'ইমিগ্রেশন পুলিশ তার মোবাইল ফোন ও পাসপোর্ট রেখে দিয়েছে।'
প্রায় ৫ লাখ টাকা খরচ করে এক বছর আগে কাজের জন্য কম্বোডিয়ায় যান জোবায়ের।
কম্বোডিয়ায় বাংলাদেশের কোনো মিশন নেই। তবে থাইল্যান্ডে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশন কম্বোডিয়ার বিষয়গুলো তদারকি করে।
এ ব্যাপারে থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ফয়েজ মুর্শিদ কাজী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাংলাদেশি অভিবাসীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে ইতোমধ্যে কম্বোডিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠিয়েছি।'
পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত অভিবাসীরা সেখানে থাকতে পারবেন বলে মনে করছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত।
অভিবাসী অধিকার সংস্থা— আইএমএ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আনিসুর রহমান খান জানান, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম), ঢাকা এবং থাইল্যান্ডকে চিঠি লিখে অভিবাসীদের ব্যাপারে সহায়তা চেয়েছেন তিনি।
ঔপনিবেশিক আমলের প্রায় ৮০০ কিলোমিটার সীমানা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দু'দেশের মধ্যে বিরোধ চলছে। সম্প্রতি এ নিয়ে সংঘাতে জড়ায় দু'দেশ। দুই সপ্তাহ ধরে চলমান এ সংঘাতে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ২৫ জন নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছে দুই দেশের ৫ লাখের বেশি মানুষ।