ডাবের বিশাল হাট জমে উঠেছে বাগেরহাটের কচুয়ায়

পার্থ চক্রবর্তী
পার্থ চক্রবর্তী
15 July 2025, 11:25 AM
UPDATED 13 October 2025, 01:58 AM

'ডেঙ্গু বাড়ার কারণে ডাবের চাহিদাও বেড়েছে। দেশের নানা জায়গা থেকে অর্ডার পাচ্ছি।'

কথাগুলো বলছিলেন বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার সাইনবোর্ড বাজারের ব্যবসায়ী সজীব শেখ।

এটি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম বড় ডাবের বাজার হয়ে উঠেছে। এখান থেকে প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন হাজার ডাব যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

আশপাশের সাংদিয়া, আফরা, টেংরাখালী, চরকাঠী, মসনী, মোরেলগঞ্জ ও বিষখালী এলাকা থেকে ভ্যান, নসিমন ও ইজিবাইকে করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ডাব নিয়ে আসেন এই বাজারে। কেউ আবার নিজের লোক দিয়ে গাছ থেকে পেড়ে সরাসরি বাজারে আনেন।

'প্রতিদিন বিকেলে ডাব আসে। বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে বেচাকেনা হয় সবচেয়ে বেশি', বলেন অপর ব্যবসায়ী প্রিন্স শেখ।

প্রতিমাসে এই বাজার থেকে প্রায় ৯০ হাজার ডাব যায় কুষ্টিয়া, রংপুর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এতে শুধু ডাব চাষিরাই নয়, লাভবান হচ্ছেন ভ্যানচালক, ইজিবাইকচালক এবং অন্যান্য নিম্নআয়ের মানুষও। স্থানীয়ভাবে সৃষ্টি হয়েছে কর্মসংস্থানের সুযোগ।

ব্যবসায়ী প্রিন্স শেখ বলেন, 'আমরা একেকটি ডাব ৬০-৭০ টাকা দরে কিনি, আর দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠাই ৮০-৯০ টাকায়। এখান থেকে যানবাহন সহজে পাওয়া যায় বলেই পরিবহন খরচ কম, তাই ব্যবসাও লাভজনক।'

green_coconut_1_0.jpg
ছবি: স্টার

তার সঙ্গী মনির বলেন, 'বর্ষাকাল আর ডেঙ্গুর মৌসুমে ডাবের চাহিদা আরও বেড়ে যায়।'

সাইনবোর্ড এলাকার ডাব বাগানের মালিক অপু কর্মকার জানান, আগে একটি ডাব ৪০ টাকায় বিক্রি করতে হতো। এখন বাজারে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় পাইকারি দামই ৬০ টাকা করে পাচ্ছেন।

টেংরাখালী গ্রামের ডাবচাষি ফায়জুল শেখ ও আবু বকর সিদ্দিক জানান, ক্রেতারা এখন বাড়িতে চলে আসেন, ফলে বেশি দাম পাওয়া যায়। 

সাইনবোর্ড বাজারের এই ডাব ব্যবসা কচুয়ার স্থানীয় অর্থনীতিতে প্রাণ এনে দিয়েছে। গ্রাম বাংলার সাধারণ একটি উপকারী ফল এখন হয়ে উঠেছে শত শত মানুষের আয়ের উৎস।

বাজারের অবস্থানগত সুবিধা ও ডাবের বাড়ন্ত চাহিদা বিবেচনায় স্থানীয়দের প্রত্যাশা, অদূর ভবিষ্যতে এটি দেশের বৃহত্তম ডাব বিক্রয়কেন্দ্রে পরিণত হয়ে উঠবে।