বেনাপোলে ২ মাস ধরে আটকে আছে ১০০ কোটি টাকার সুপারি
ভারতের কাস্টমস কর্তৃপক্ষের জটিলতায় বেনাপোল স্থলবন্দরে প্রায় দুই মাস ধরে আটকে আছে সুপারি বোঝাই দেড় শতাধিক ট্রাক। এসব সুপারির বাজারমূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা। অচলাবস্থার কারণে ট্রাকপ্রতি দিনে দুই হাজার টাকা হিসেবে প্রতিদিন প্রায় তিন লাখ টাকা গচ্চা দিতে হচ্ছে রপ্তানিকারকদের।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পেট্রাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ মান পরীক্ষার অজুহাতে পণ্য ছাড়ে বিলম্ব করছে। এতে রপ্তানিকারকেরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির শঙ্কায় রয়েছেন।
মান ভালো হওয়া ভারতে বাংলাদেশি সুপারির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রতিবছর দেশটিতে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার সুপারি রপ্তানি হয়। ভারত যত সুপারি আমদানি করে গত বছর তার ৩৭ শতাংশ চাহিদা পূরণ হয়েছে বাংলাদেশ থেকে।
বন্দর এলাকায় আটকে থাকা ট্রাকচালক আব্দুল মোমিন বলেন, '১ মাস ২৭ দিন ধরে এখানে আটকে আছি। প্রতিদিন নানা সমস্যার মধ্য দিয়ে দিন পার করতে হচ্ছে।'
রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স আউলিয়া এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি আশরাফুল ইসলাম বলেন, 'মান পরীক্ষার অজুহাতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কালক্ষেপণ করছে। এই দীর্ঘসূত্রতায় প্রতিদিন আমাদের বিপুল পরিমাণ টাকা গচ্চা দিতে হচ্ছে।'
ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে ভারত পণ্য আমদানিতে নানা কড়াকড়ি ও শর্ত আরোপ করেছে। এতে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য কমে প্রায় ৩০ শতাংশে নেমে এসেছে।
বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, বাণিজ্যে ব্যাঘাত ঘটলে দুই দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সংকট নিরসনে দ্রুত দুই দেশের সরকারি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। তিনি জানান, ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কড়াকড়ির কারণে স্থলপথে পাট ও পাটজাত পণ্য, তৈরি পোশাক, কাঠের আসবাব ও ফলের রসসহ বেশ কিছু পণ্যের রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।
বেনাপোল উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপপরিচালক আবু তালহা জানান, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে এই বন্দর দিয়ে ১০ হাজার ৬৫০ টন সুপারি ভারতে রপ্তানি হয়েছে। তিনি বলেন, 'ট্রাক আটকে থাকার বিষয়টি আমরা জানি। আটকে থাকা চালানের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পেলে দ্রুত ছাড়করণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
বিষয়টি নিশ্চিত করে বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) মো. শামীম হোসেন বলেন, অচলাবস্থার কারণে বন্দর এলাকায় প্রায় ১০০ কোটি টাকা মূল্যের দেড় শতাধিক সুপারির ট্রাক আটকে আছে।