কোকা-কোলা বাংলাদেশ বেভারেজেস কিনে নিচ্ছে তুরস্কের আইসেক

সোহেল পারভেজ
সোহেল পারভেজ
16 February 2024, 06:56 AM
UPDATED 17 February 2024, 15:12 PM

তুরস্কের কোকা-কোলা আইসেক (সিসিআই) ১৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে কোকা-কোলা বাংলাদেশ বেভারেজেস লিমিটেডকে (সিসিবিবি) অধিগ্রহণের একটি চুক্তি করেছে।

কোকা-কোলা বাংলাদেশ বেভারেজেস লিমিটেড দেশে কোক ব্র্যান্ডের পানীয় উৎপাদন, বিক্রয় ও বিতরণ করে থাকে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সিসিআইয়ের ওয়েবসাইটে পোস্ট করা বিবৃতির তথ্য মতে, কোকা-কোলা আইসেক সিসিবিবির প্রাক্কলিত নিট আর্থিক ঋণ বিয়োগ করে ১৩০ মিলিয়ন ডলার বা ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার বেশি নেট মূল্যে ১০০ শতাংশ শেয়ার অধিগ্রহণ করবে।

এতে বলা হয়েছে, 'ক্লোজিং অডিট শেষে সমাপ্তির তারিখ থেকে সিসিবির সঠিক নেট আর্থিক ঋণের পরিমাণ নির্ধারণ ইক্যুইটি মূল্য একটি পোস্ট-ক্লোজিং মূল্য সমন্বয় প্রক্রিয়া সাপেক্ষে হবে।'

ধারণা করা হচ্ছে সিসিআই ইন্টারন্যাশনাল হল্যান্ড বিভি (সিসিআইএইচবিভি) এই অধিগ্রহণে নগদ অর্থায়ন করবে।

সিসিবিবির কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ঢাকায় নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের পর এই চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার কথা আছে।

ঘোষণা অনুযায়ী, সিসিআই তার সম্পূর্ণ মালিকানাধীন সাবসিডিয়ারি সিসিআইএইচবিভি ও কোকা-কোলা কোম্পানির একটি সাবসিডিয়ারির সঙ্গে এই চুক্তি করেছে। যার প্রধান শেয়ারহোল্ডার হবে সিসিআইএইচবিভি।

কোকা-কোলা কোম্পানির সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল বেভারেজেস প্রাইভেট লিমিটেড (আইবিপিএল) ২০১৭ সালে ৭৪ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে ময়মনসিংহের ভালুকায় কারখানাটি স্থাপন ও অন্যান্য অবকাঠামো গড়ে তোলে। তার সাত বছর পর সিসিবিবি ইস্তাম্বুলভিত্তিক কোম্পানিতে রূপান্তরিত হতে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের কোমল পানীয়ের বাজার ৪ হাজার কোটি থেকে ৬ হাজার কোটি টাকা। যুক্তরাষ্ট্রের দুই কোমল পানীয় প্রস্ততকারক প্রতিষ্ঠান কোকা-কোলা ও পেপসিকোর পাশাপাশি প্রাণ, আকিজ ও পারটেক্সের মতো বেশ কয়েকটি স্থানীয় প্রতিষ্ঠান এই চাহিদা পূরণ করে।

সিসিআইয়ের মতে, ২০৩২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের নন-অ্যালকোহলিক কোমল পানীয়ের বাজার ১২ শতাংশ বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সিসিআই কোকা-কোলার ব্র্যান্ড উৎপাদন, বিতরণ ও বাজারজাত করে এবং ১১টি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। এই দেশগুলো হলো- আজারবাইজান, ইরাক, জর্ডান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, পাকিস্তান, সিরিয়া, তাজিকিস্তান, তুরস্ক, তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তান।

সিসিআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা করিম ইয়াহি বলেছেন, 'আমরা সিসিবিবি অধিগ্রহণের জন্য শেয়ার ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষর করতে পেরে আনন্দিত। এই চুক্তিকে আমরা ভবিষ্যতের সম্ভাবনাসহ বাজারে প্রবেশের দারুণ সুযোগ হিসেবে দেখছি।'

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পূর্বাভাসের বরাত দিয়ে সিসিআই বলেছে, ২০১২ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি বার্ষিক গড়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ হারে বেড়েছে এবং ২০২৩ থেকে ২০২৮ সালের মধ্যে বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৭ শতাংশ হারে বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

সিসিবিবি রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও ঢাকা অঞ্চলের প্রায় দশ কোটি গ্রাহককে সেবা দিয়ে থাকে। তাদের তিন শতাধিক কর্মচারী, একটি বোতলজাত প্লান্ট ও তিনটি প্রধান গুদামসহ প্রায় তিন লাখ বিক্রয় পয়েন্ট আছে। এছাড়া তাদের ৫০০ ডিস্ট্রিবিউটর আছে।

(এই প্রতিবেদনটি ইংরেজি থেকে ভাষান্তর করেছেন রবিউল কমল)