রেল যোগাযোগ স্থাপনে সম্মত ইরান-তুরস্ক, শিগগির শুরু হবে নির্মাণকাজ
সম্প্রতি প্রতিবেশী দেশ ইরান ও তুরস্ক নিজেদের মধ্যে রেল যোগাযোগ স্থাপনে সম্মত হয়েছে। শিগগির এর নির্মাণকাজ শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
আজ রোববার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচির বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।
আরাকচি জানান, এই রেলপথ এশিয়া-ইউরোপের মধ্যে কৌশলগত যোগাযোগব্যবস্থা হিসেবে কাজ করবে।
ইরান এই রেলপথের নাম দিয়েছে 'মারান্দ-চেশমেহ সোরায়া রেলওয়ে ট্রানজিট লাইন'। এটি তুরস্কের আরালিক সীমান্ত অঞ্চল দিয়ে দেশটিতে প্রবেশ করবে। এর মোট দৈর্ঘ্য ১২০ কিলোমিটার।
নির্মাণকাজে খরচ হবে প্রায় এক দশমিক ছয় বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং তিন থেকে চার বছরের মধ্যে এটি আলোর মুখ দেখবে বলে ইরান কর্তৃপক্ষ আশাবাদ প্রকাশ করেছে।
এ মাসের শুরুতে ইরানের পরিবহন মন্ত্রী ফারজানেহ সাদেক জানান, এই রেললাইনটি চীন থেকে ইউরোপ পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন রেল যোগাযোগ নিশ্চিত করতে করিডর হিসেবে কাজ করবে। পুরাকালের 'সিল্ক রোড' খ্যাত বাণিজ্য পথের দক্ষিণ অংশকে রেলপথে রূপান্তরের মাধ্যমে এই লক্ষ্য পূরণ হবে বলে তিনি জানান।
পাশাপাশি, এই রেলপথ 'সবচেয়ে দ্রুত ও সাশ্রয়ী উপায়ে, সব ধরনের পণ্য পরিবহন' নিশ্চিত করবে এবং এই পথ পাড়ি দিতে খুব বেশিবার বিরতি নিতে হবে না।
শনিবার তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান-এর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আরাকচি বলেন, 'দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বাধা দূর করার ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে'
'দুই দেশ এই অঞ্চলে রেল যোগাযোগ স্থাপনে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। তাদের প্রত্যাশা, যত দ্রুত সম্ভব এই রেলপথের নির্মাণ শুরু হবে', যোগ করেন আরাকচি।
প্রাচীন আমলের সিল্ক রোড ছিলে একটি সুবিশাল বাণিজ্য পথ। এর মাধ্যমে বেশ কয়েক শতাব্দীজুড়ে পূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপ সংযুক্ত ছিল। সিল্ক রোডের মাধ্যমে এক মহাদেশ থেকে আরেক মহাদেশে পণ্য, সংস্কৃতি ও জ্ঞানের প্রবাহ দেখা যেত।
২০১৩ সালে চীন 'বেল্ট অ্যান্ড রোড' উদ্যোগ চালুর ঘোষণা দেয়। এটি আনুষ্ঠানিকভাবে 'নতুন সিল্ক রোড' নামে পরিচিত। ওই প্রকল্পের লক্ষ্য বৈশ্বিক বাণিজ্য বাড়াতে নৌ, সড়ক ও রেলযোগাযোগের অবকাঠামো নির্মাণ।
চীনের উদ্যোগ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই ইরান তার প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে অবকাঠামো ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়ে আসছে।
বেশ কয়েক দশক ধরে বিভিন্ন ধরনের আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধে জর্জরিত ইরানের অর্থনীতি। দেশটির সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়নের বিভিন্ন উদ্যোগের অংশ হিসেবেই এই রেলপথ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে তেহরান।

