হাকালুকি হাওরের মালাম বিল রক্ষায় হাইকোর্টের রুল

By নিজস্ব সংবাদদাতা, মৌলভীবাজার
15 January 2024, 13:46 PM
UPDATED 16 January 2024, 09:01 AM

হাকালুকি হাওরের অন্তর্ভুক্ত মালাম বিল ও বিলের জলাবন রক্ষায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ ১৬ সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আজ সোমবার হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন।

সেইসঙ্গে ২০২০ সালের ২৫ অক্টোবর মনাদী মৎসজীবী সমিতি বরাবর মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকের দেওয়া ইজারা বাতিল চেয়ে গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) পাঠানো চিঠি নিষ্পত্তির আদেশ দেন আদালত। 

বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহ সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বেলার দায়ের করা জনস্বার্থমূলক এক মামলার প্রাথমিক শুনানি শেষে এই রুল জারি করেন।

বেলা সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সমন্বয়ক ও আইনজীবী শাহ সাহেদা আখতার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গত বছরের ২৭ নভেম্বর দায়ের করা মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট এস. হাসানুল বান্না এবং তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট শামীমা নাসরিন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আযাদ সরকার।

উল্লেখ্য, দেশের বৃহত্তম হাওর হাকালুকি মৌলভীবাজারের বড়লেখা, জুড়ি ও কুলাউড়া উপজেলা এবং সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ ও গোপালগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। এটি দেশের অন্যতম প্রধান মিঠা পানির বন।

১৯৯৯ সালের ১৯ এপ্রিল এ হাওরের ১৮ হাজার ৩৮৩ হেক্টর এলাকাকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করা হয়। এ হাওরে ছোট-বড় অনেক বিল রয়েছে, যার মধ্যে মালাম বিল অন্যতম। মালাম বিল বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের দ্বিতীয়ারদেহী-৮৩ মৌজার এস এ ৫৪ ও ১০৮ দাগে অবস্থিত, যার আয়তন ৪২৮.৯২ একর । বিলটি বদ্ধ জলমহাল হিসেবে ৫ বছর মেয়াদে জেলা প্রশাসক মানাদী মৎসজীবী সমবায় সমিতিকে ইজারা দেন।

পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শন ও বড়লেখা ভূমি অফিসের তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইজারা চুক্তি লঙ্ঘন করে এ বিলের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে সংকটাপন্ন এলাকায় প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট ও পরিবেশ অধিদপ্তরের লাগানো বিভিন্ন প্রজাতির জলজ গাছ কেটে মানাদী মৎসজীবী সমবায় সমিতি ২ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ ও ১০-১২ বিঘা জমি চাষ উপযোগী করেছে। এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর বড়লেখা থানায় ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করলেও এবং সংকটাপন্ন এলাকার বৈশিষ্ট্য নষ্ট করে জলজ প্রজাতির গাছ নিধন ও বাঁধ নির্মাণের স্পষ্ট অভিযোগ থাকলেও মামলায় ইজারা গ্রহীতাকে বিবাদী করা হয়নি এবং ইজারা চুক্তি বাতিল করা হয়নি।সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষিত হাকালুকি হাওর ও মালাম বিল রক্ষায় বেলা তখন মামলাটি দায়ের করে।