আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কখনো পারফেক্ট ছিল না, নির্বাচনের পরিবেশ ভালো হবে: সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, 'বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কখনো পারফেক্ট ছিল না। বলে তো লাভ নাই! চুরি-ছিনতাই, মারামারি—এগুলো কি আগে ছিল না? আগেও ছিল। সব সময়ই ছিল।'
আজ শনিবার গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, 'নির্বাচনের সার্বিক পরিবেশ ভালো হবে, সেটা আমরা নিশ্চিত করব ইনশাআল্লাহ।'
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের প্রস্তুতি হিসেবে আজ সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর শেরেবাংলা নগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে মক ভোটিংয়ের আয়োজন করে কমিশন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, 'আজকের এই অ্যাসেসমেন্টের ভিত্তিতে আমরা ঠিক করব, ভোটকেন্দ্র যে ৪২ হাজার ৫০০টির বেশি ঠিক করেছি, এটা আমাদের জন্য পর্যাপ্ত কি না।'
তিনি আরও বলেন, 'বাস্তব পরিস্থিতি দেখে, বিশ্লেষণ করে আমরা পরবর্তী পরিকল্পনা করব। তাহলে আমরা একটা হিসাব করতে পারবো, সেন্টার যদি বাড়াতে হয়—বাড়াবো। যদি বুথ বাড়িয়ে চলে, সেটা করব। বর্তমানে বাক্স যেগুলো কিনেছি করেছি, তা যদি পর্যাপ্ত হয়—হবে। আর যদি না হয়, আর কী কী কিনতে হবে, সেগুলো আমরা সেরে ফেলবো।'
নির্বাচনে 'কোনো অসুবিধা হবে না' এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে সিইসি বলেন, 'আমরা সবাই মিলে যে ওয়াদা জাতিকে দিয়েছি, সেটা আমরা ইনশাআল্লাহ ডেলিভার করব। আমি বারবার বলে যাচ্ছি, এভাবে উন্মুক্তভাবে—আজকে মক ভোটিংটা যে রকম হলো, আমরা সেইভাবে একটা ইলেকশন উপহার দিতে চাই।'
ভোটকেন্দ্রে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, 'আপনারা দেখলেন, একটা রুমের মধ্যে এজেন্ট আছে, পোলিং অফিসার আছে, প্রিসাইডিং অফিসার আছে, ভোটার ঢুকছেন, আবার দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক আসবে। এখন সাংবাদিক ভাইয়েরা যদি ওখানে ঢুকে ধাক্কাধাক্কি করেন, অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন, তাহলে একটা হ-য-ব-র-ল অবস্থা সৃষ্টি হবে। এটা এড়াতে আমরা বলছি, আপনারা একটু নিজেদের বিবেক কাজে লাগিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ সেরে বেরিয়ে যাবেন। এটা কিন্তু আপনাদের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করার জন্য নয়।'
ভোটাররা এখনো জানেন না গণভোট কীভাবে দিতে হয়—এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, 'জানার কথাও না। আমরা গণভোট নিয়ে প্রচারণা এখনো ওইভাবে শুরু করিনি। সরকার ও নির্বাচন কমিশন মিলে গণভোট নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালাবে। গণভোটের যে বিষয়গুলো, এটা আমাদের প্রচারণার বিশাল অংশজুড়ে থাকবে। প্রচারণাটা যখন শুরু হবে, তখন বোঝা যাবে যে মানুষ জানলো নাকি জানলো না।'
'গত মঙ্গলবার মাত্র অধ্যাদেশটা হলো, আইনটা হলো। আইন হওয়া মানে হচ্ছে, ইলেকশন কমিশনকে অথরাইজ করা,' যোগ করেন তিনি।
দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রার্থীদের প্রচারণায় হামলা হচ্ছে, কমিশনের কঠোর অবস্থান জাতি দেখবে কি না—গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে নাসির বলেন, 'আমি সেদিন বলেছিলাম ৫ আগস্ট ২০২৪ রাতে তো ঘুমাতে পারিনি। কোনো থানা সক্রিয় ছিল না, আমাদের নিজেদের নিরাপত্তায় থাকতে হয়েছে। এখন কি সেই অবস্থা আছে? পরিস্থিতি আগের থেকে অনেক ভালো হয়েছে। সবাই বাড়িতে শান্তিতে ঘুমাতে পারছেন। আপনি শান্তিতে আসছেন এ পর্যন্ত। আপনার ক্যামেরা কি কেউ পথে ছিনতাই করেছে? করেনি।'
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থানে আছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'আমরা প্রতিনিয়ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করছি। তাদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছি। তাদেরও প্রশিক্ষণ হচ্ছে।'
ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা হতে পারে বলেও এ সময় আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
