গুদামে এখনো প্রাণঘাতী মাত্রায় হাইড্রোজেন সালফাইডের উপস্থিতি আছে

By স্টার অনলাইন রিপোর্ট
17 October 2025, 17:31 PM
UPDATED 17 October 2025, 23:39 PM

রাজধানীর রূপনগরের শিয়ালবাড়িতে আগুনে পুড়ে যাওয়া রাসায়নিক গুদামের ভেতরে 'তাৎক্ষণিক প্রাণঘাতী' মাত্রার বিষাক্ত হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

আজ শুক্রবার বিকেলে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ডিএমপির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের দলনেতা সহকারী পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান।

তিনি বলেন, বিকেলে গুদামের ভেতরে হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসের মাত্রা ছিল ১৪৯ পিপিএম। এই গ্যাস কোথাও ১০০ পিপিএমের বেশি থাকলে মানুষ তাৎক্ষণিকভাবে অচেতন হয়ে মারা যেতে পারে।

মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান বলেন, কার্বন মনোক্সাইডসহ অন্যান্য বিষাক্ত গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। গুদামের ভেতরে এখনো অনেক রাসায়নিকের বস্তা মজুত আছে। 

এর আগে তিনিসহ ইউনিটের চার সদস্য গ্যাস ডিটেকটর ও অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে গুদামের ভেতরে যান।

মাহমুদুজ্জামান আরও বলেন, গ্যাসের মাত্রা ওঠা-নামা করছে এবং তা ক্রমশ বাড়ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার আমাদের ডিটেকটরে হাইড্রোজেন সালফাইডের মাত্রা ছিল ২০ পিপিএমের বেশি, আজ শুক্রবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৯ পিপিএম।

'আশপাশের বাতাসেও অন্যান্য বিষাক্ত উপাদান পাওয়া গেছে। অন্তত ১৫০-৩০০ মিটার এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া ভালো', যোগ করেন তিনি। 

মাহমুদুজ্জামান বলেন, এই গ্যাস বাতাসের গতিতে অন্তত দেড় কিলোমিটার দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে।

ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আমাদের তথ্য অনুযায়ী, অগ্নিকাণ্ডের আগের দিনই প্রায় ৭ কোটি টাকার রাসায়নিক এই গুদামে মজুত করা হয়। তখন গুদামটি পুরোপুরি ভর্তি ছিল।

গত মঙ্গলবার শিয়ালবাড়িতে গার্মেন্টস ও রাসায়নিক গুদামে অগ্নিকাণ্ডে ১৬ জন নিহত হয়েছেন।

এদিকে শুক্রবারও দুর্ঘটনাস্থলে ভিড় করেন উৎসুক জনতা ও স্বজনহারা পরিবারের সদস্যরা। পাশের সড়কগুলোর কারখানা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান টানা তৃতীয় দিনের মতো বন্ধ ছিল।

কয়েকজন 'এরিয়ান ফ্যাশন' পোশাক কারখানায় ঢোকার জন্য পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙারও চেষ্টা করেন—যে কারখানাটি মঙ্গলবারের আগুনে সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে।

তাদের দাবি, ঢামেকে নেওয়া ১৬ জনের মরদেহের মধ্যে তাদের স্বজনদের কেউ নেই; প্রিয়জনদের মরদেহ এখনো গুদামের ভেতরেই পড়ে আছে।

তাদের মধ্যে থাকা তারা বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আমারা ছেলে আবদুল আলীম (১৪) গত মাসে ওই কারখানায় কাজ করেছিল। কিন্তু এখনো বেতন পায়নি। মঙ্গলবার বেতন নিতে কারখানায় আসতে বলা হয়েছিল তাকে। সেদিনই অগ্নিকাণ্ড ঘটে, এরপর থেকে ছেলেকে আর দেখিনি।

তিনি বলেন, ঢামেকের মর্গে থাকা কোনো মরদেহই আমার ছেলের মতো নয়। আমি ভেতরে যেতে চাই। আমার ছেলের দেহ এখনো ওখানেই পড়ে আছে।