নকশাতেই হয়ত ত্রুটি ছিল, বিয়ারিং প্যাড হঠাৎ খুলে পড়েনি: ডিএমটিসিএল
ফার্মগেটে মেট্রোরেলের পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড পড়ার ঘটনাটি আকস্মিক নয়। এর পেছনে নকশা, নির্মাণ উপকরণ বা পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ত্রুটি থাকতে পারে। আজ সকালে উত্তরায় ডিএমটিসিএল কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ।
ফারুক আহমেদ বলেন, এটি হঠাৎ করে খুলে পড়েনি। এটি আকস্মিকভাবে ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনা নয়। এই ঘটনার পেছনে চারটি সম্ভাব্য কারণ থাকতে পারে।
সম্ভাব্য কারণগুলো ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, কাঠামোগত বা বিয়ারিংয়ের নকশাগত ত্রুটির কারণে এটি ঘটতে পারে; নির্মাণগত ত্রুটি থাকতে পারে; ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে নির্দেশনা অনুসরণ না করায় ইনস্টলেশন কাজেরও ত্রুটি থাকতে পারে।
তিনি আরও যোগ করেন, পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতার কারণেও সমস্যাটি হতে পারে। কারণ, জড়িত পরামর্শক সংস্থাগুলো হয়তো প্রকল্পের কিছু কারিগরি দিক পুরোপুরি বুঝতে পারেনি।
ফারুক আহমেদ বলেন, এই কারণগুলো পরস্পর সম্পর্কিতও হতে পারে। যেহেতু তদন্ত কমিটি কাজ করছে, তাই আমি এই পর্যায়ে কোনো চূড়ান্ত মন্তব্য করতে চাই না।
এমডি জানান, নকশায় সম্ভাব্য ত্রুটি শনাক্ত করতে এবং মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিএমটিসিএল স্বাধীনভাবে মেট্রোরেল অবকাঠামোর একটি সেফটি অডিট চালাবে। একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, মেট্রোরেলের অবকাঠামোর মেয়াদ ১০০ বছর এবং বিয়ারিংগুলো ৫০ বছর টেকসই হওয়ার কথা। অথচ মাত্র দুই বছরের মধ্যেই আমরা এমন অবস্থা দেখছি। এজন্যই অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষার চেয়ে স্বাধীন নিরীক্ষা বেশি নির্ভরযোগ্য হবে।
দুটি ফরাসি কোম্পানি এরই মধ্যে এই নিরীক্ষার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, এটি রাতারাতি ঘটবে না। নিরীক্ষাটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হতে হবে। আমরা সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যে প্রক্রিয়াটি শেষ করতে চাই।
ক্ষতিগ্রস্তের পরিবারকে কেন ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না এবং ৩০ দিনের মধ্যে স্বাধীন তদন্ত প্রতিবেদন চাওয়ার বিষয়ে হাইকোর্টের রুলের প্রতি সাংবাদিকেরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বলেন, 'আদালত যে আদেশ দেবেন, আমরা তা প্রতিপালন করব। এ বিষয়ে আমার এখানে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।'
তিনি সিসিটিভি ক্যামেরায় মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাডগুলো পর্যবেক্ষণের একটি নতুন উদ্যোগের কথাও ঘোষণা করেন। তবে এটা একটা অস্থায়ী ব্যবস্থা। তিনি বলেন, এতে হয়ত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ পাওয়া যাবে, কিন্তু এটি চূড়ান্ত সমাধান হতে পারে না। আমাদের দরকার স্থায়ী সমাধান।