শাহবাগে প্রতিবাদী গানের অনুষ্ঠানে ‘জুলাই মঞ্চের’ হামলার অভিযোগ
সারাদেশে বাউলদের ওপর হামলা ও কারাবন্দি বাউল আবুল সরকারের মুক্তির দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে আয়োজিত প্রতিবাদী গানের অনুষ্ঠানে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ শুক্রবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের সামনে 'গানের আর্তনাদ' শীর্ষক এ কর্মসূচি আয়োজন করে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম 'সম্প্রীতি যাত্রা'।
বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সেখানে এসে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে 'জুলাই মঞ্চের' কর্মীরা। পরে উভয়পক্ষ মুখোমুখি হলে সেখানে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
'গানের আর্তনাদ' কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমেদ চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখানে আমাদের কর্মসূচি চলছিল। হঠাৎ করে জুলাই মঞ্চের ২০-২৫ জন এখানে অতর্কিত হামলা করে।'
'হামলাকারীরা স্টেজ ভাঙচুর করে এবং নারীসহ অন্যদের গায়ে হাত তোলে। এরকম উসকানিমূলক আচরণ বা হামলা মানে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ভাষাকে দমন করার চেষ্টা,' বলেন তিনি।
বাধার পরও কর্মসূচি চলমান থাকবে বলে জানান তিনি।
আরেক নারী অংশগ্রহণকারী বলেন, 'জুলাই মঞ্চের কয়েকজন মাইক নিয়ে এসে স্লোগান দিয়ে বিরক্ত করার চেষ্টা করে। আমরা তাদেরকে চলে যেতে বলি। কিন্তু তারা একপর্যায়ে আমাদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি শুরু করে। তারা আমাদের ব্যানার ফেলে দেয়।'
'তারা বারবার তেড়ে আসছিল এবং বোতল ছুড়ে মারে। আমরা এখানে বলেছি, "আবুল সরকারের মুক্তি চাই।" তারা বলছে, "আবুল সরকারের মুক্তি চাই না।" তারা এভাবে আমাদের কর্মসূচিতে বাধা দিতে পারে না,' বলেন তিনি।
জানতে চাইলে জুলাই মঞ্চের আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম তালুকদার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শাহবাগে আমাদের একটা কর্মসূচি ছিল জাতীয় মূল্যবোধ রক্ষায়। বাউলদের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। কিন্তু বাউল আবুল সরকার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে এবং তার বিচার আমরা দাবি করছি।'
তিনি আরও বলেন, 'যারা এখানে বাউল আবুল সরকারের মুক্তি চেয়ে প্রোগ্রাম করছে তাদের উদ্দেশে আমরা মাইকে বারবার বলেছি যে, তার মুক্তি দাবি করা যাবে না এবং আমরা তার বিচার চাই। কিন্তু তারা রিকশায় থাকায় আমাদের মাইক ভেঙে ফেলে, রিকশাচালক আহত হন। আমরা অশান্তি চাই না। তাই আমরা আর কিছু না করে চলে এসেছি।'
আজকের ঘটনায় জুলাই মঞ্চের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
যোগাযোগ করা হলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা দেখেছি এখানে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। তবে কোনো পক্ষ থেকে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি।'
বিকেল ৫টার দিকে 'সম্প্রীতি যাত্রা'য় অংশগ্রহণকারীদের নাগরিক সংহতি ও বক্তব্য শেষে প্রতিবাদী গানের অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর সেখানে মশাল মিছিল হওয়ার কথা আছে।