হেফাজতের হুঁশিয়ারি: প্রাথমিকে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ না দিলে কর্মসূচি
দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত শিক্ষক নিয়োগের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার, তার কঠোর সমালোচনা করেছে হেফাজতে ইসলাম।
কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক এই সংগঠনটির মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত বাতিল করে সংগীত শিক্ষকের জায়গায় ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। না হলে হেফাজতে ইসলাম আবার কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।
আজ শনিবার বিকেলে ঢাকার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে শায়খুল হাদীস পরিষদ আয়োজিত জাতীয় সম্মেলনে এই হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
প্রাথমিক স্তরে সংগীত শিক্ষক নিয়োগের এ পদক্ষেপকে 'ইসলামবিরোধী এজেন্ডা' হিসেবে অভিহিত করে আসছে হেফাজতে ইসলাম । বিষয়টি নিয়ে আজ সম্মেলনে সাজেদুর রহমান বলেন, 'যারাই ইসলামের বিরুদ্ধে যাবেন, তাদের বিরুদ্ধে ওলামা একরামের জিহাদ চলবে।'
শায়খুল হাদীস পরিষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক মাওলানা মাহফুজুল হকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন হেফাজতের আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।
তিনি বলেন, 'কোনো দল যদি বলে ও মনে করে, সাহাবারা সত্যের মাপকাঠি না, তারা অবশ্যই বিভ্রান্ত।'
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, 'বাংলাদেশ ৯০ থেকে ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশ। তাহলে আমাদের মধ্যে এত বিভক্তি কেন? আমাদের বিভক্ত রাখতে পারলে কাদের লাভ? সেটা আমাদের বুঝতে হবে।'
এই বিএনপি নেতার ভাষ্য, আমরা চাই বাংলাদেশের সকল মুসলমান ঐক্যবদ্ধ থাকুক এবং ইসলাম নিয়ে যেন আমরা বিভক্তিকর, বিভ্রান্তিকর রাজনীতি কেউ না করি।
রাজনীতি দিয়ে ইসলামী শক্তিকে বিভক্ত করা ঠিক নয় বলেও মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। বলেন, 'আমি আমাদের দলের পক্ষ থেকে এই মেসেজটা দিতে চাই যে, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ অরাজনৈতিক সংগঠন হলেও বাংলাদেশের ৯০-৯২ ভাগ মুসলমান তো আপনাদেরকেই দ্বীনের রাহবার মনে করে। করা উচিত। আপনারা সে দায়িত্ব পালন করে যাবেন। যারাই রাষ্ট্রক্ষমতায় আসুক আপনারা তাদের পরামর্শ দিয়ে যাবেন। এই রাষ্ট্রটা যেন কোনোদিন একটা পার্শ্ববর্তী ভিনদেশের তাঁবেদার রাষ্ট্র না হতে পারে।'
সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন তার বক্তব্যে জুলাই অভ্যুত্থানে দেশের কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের অবদান তুলে ধরেন। বলেন, 'যাদের (কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী) আসলে বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে অংশগ্রহণের কোনো সুযোগই নেই। কোটা থাকল কি না থাকল তাতে তাদের কিছু যায় আসে না। এক্ষেত্রে তাদের ব্যক্তিগত কিংবা গোষ্ঠীগত কোনো স্বার্থ না থাকা সত্ত্বেও তারা আন্দোলনে এসেছেন। জীবন দিয়েছেন। শহীদ হয়েছেন।'
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান তার বক্তব্যে বলেন, 'এ দেশে কেউ কখনো ইসলামের বিরুদ্ধে গিয়ে, ইসলামের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে রাজনীতি করতে পারেনি। আগামীতেও কেউ পারবে না।'
কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে রাশেদ আরও বলেন, 'জ্ঞান-বিজ্ঞানে আপনাদের আরও বেশি করে নিজেদের আবিষ্কার করতে হবে। আমরা চাই আলেমরা এ দেশের নেতৃত্বে আসুক।'
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের বলেন, 'মুসলমানদের অবশ্যই ইসলামের আলোকে দেশ পরিচালনা করতে হবে। এর বিরুদ্ধে যারা কথা বলবেন ওলামায়ে একরাম তাদের গ্রহণ করবে না।'
