নৈরাজ্য আর জনভোগান্তির নগর

By স্টার অনলাইন রিপোর্ট
29 June 2021, 05:38 AM
UPDATED 29 June 2021, 11:45 AM

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সোমবার থেকে শুরু হওয়া সীমিত পরিসরের ‘লকডাউনের’ দ্বিতীয় দিনেও গণপরিবহনের অভাবে ভোগান্তিতে পড়েছেন রাজধানীর অফিসগামী যাত্রীরা।

গতকাল সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় চালক ছাড়া অন্য কোনো আরোহী না নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। সকালে সড়কে রাইড শেয়ারিং সার্ভিসের মোটরসাইকেলের সংখ্যা তুলনামূলক কম থাকলেও যাত্রী বহন করতে দেখা গেছে।

Lockdown_29June21.jpg
ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে মোটরসাইকেলে আরোহী বহন না করতে অনুরোধ জানানো হলেও তা মানা হচ্ছে না। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ছবিটি বিজয় সরণি এলাকা থেকে তোলা। ছবি: পলাশ খান/স্টার

এদিন সকাল সাড়ে ৭টার পর থেকে ঢাকার শেওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড, আসাদ গেট, জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের এলাকা, ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজার এলাকায় বিপুল সংখ্যক যাত্রীকে দীর্ঘ সময় যানবাহনের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

এর মধ্যে অনেকে অতিরিক্ত ভাড়ায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ভ্যান ও প্যাডেলচালিত রিকশায় চড়ে কিংবা পায়ে হেঁটেই গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেন।

সকাল পৌনে ৮টার দিকে বেগম রোকেয়া সরণির তালতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কথা হয় শাহবাগের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত জিনাত শারমীনের সঙ্গে। কোনো সিএনজি অটোরিকশা পেলে দৌঁড়ে যাচ্ছিলেন তিনি। দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, ‘তালতলা থেকে শাহবাগ যেতে সিএনজিগুলো চার শ-পাঁচ শ টাকা পর্যন্ত চাচ্ছে। স্বাভাবিক সময়ে বাসে যাই। আর সিএনজিতে গেলে বড়জোর আড়াই শ টাকা নেয়।’

ক্ষোভের সঙ্গে এই নারী বলেন, ‘এখন না হয় পাঁচ শ টাকা খরচ করে অফিস গেলাম। ফেরার সময়েও তো একই রকম খরচ পড়বে। তাহলে কীভাবে পারব?’

কাছাকাছি জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিলেন রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান উবারের মোটরসাইকেল চালক আরিফুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ভয়ে ভয়ে রাস্তায় নেমেছি। সকাল সকাল দুটো ট্রিপ মারলেও এখন আবার যাত্রী নিয়ে যেতে সাহস পাচ্ছি না। পুলিশ ঝামেলা করতে পারে।’

বিজয় সরণি মোড়ে পৌঁছে আরিফুরের এই আশঙ্কার বাস্তব রূপ চোখে পড়ল। দেখা গেল, পুলিশ একটি মোটরসাইকেল থেকে আরোহীকে নামিয়ে দিচ্ছে।

আবার খামারবাড়ি থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত সড়কজুড়ে ছিল রিকশার রাজত্ব। অনেক রিকশা চলছিল উল্টো পথে। পাশাপাশি দ্রুত লেন পরিবর্তনের জন্য যানজট লেগে যাচ্ছিল।

Lockdown3_29June21.jpg
চলাচল সীমিত হওয়ার কথা থাকলেও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আজ তীব্র যানজট দেখা যায়। ছবিটি খামার বাড়ি এলাকা থেকে তোলা। ছবি: রবিউল কমল/স্টার

ফার্মগেট মোড়ে কিছু অফিসগামী যাত্রীকে একটি পিকআপ ভ্যানের পেছনে উঠে পড়তে দেখা যায়। কেউ কেউ ফাঁকা ভ্যানেও চড়ে বসছিলেন। এ সময় ফুটপাত ধরে প্রচুর অফিসগামী মানুষকে হেঁটে যেতে দেখা যায়।

খিলগাঁও থেকে সকাল সোয়া ৯টায় কারওয়ান বাজারে অফিসের উদ্দেশে রওনা হন আব্দুল্লাহ আল আমিন। এক ঘণ্টা পরে সকাল ১০টায় মগবাজার মোড়ে জ্যামে বসে তিনি জানান, কোনোভাবেই মনে হয়নি লকডাউন বা এ ধরনের কিছু আছে। ফ্লাইওভার যখন ছিল না, তখন যেমন যানজট হতো— আজও তেমন যানজট দেখলাম।