পালমার দেখিয়েছে, 'তার ভেতরে কী আছে'

By স্পোর্টস ডেস্ক
14 July 2025, 03:25 AM
UPDATED 12 October 2025, 01:12 AM

একটি প্যারিসিয়ান উৎসব হয়ে ওঠার কথা ছিল এই ফাইনাল. কিন্তু নিরবে, স্থির ভঙ্গিতে এবং নির্মম কার্যকারিতায় সব পূর্বাভাস ওলটপালট করে দিয়ে চেলসিকে ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা এনে দিলেন কোল পালমার। নিউইয়র্কের মেটলাইফ স্টেডিয়ামের ঝলসানো গরম রাতে সকলের দৃষ্টি ছিল প্যারিস স্যাঁ জার্মেইর তারকায় ভরা দলটির দিকে। কিন্তু ম্যাচ শেষে সবার মুখে শুধুই এখন পালমারের নাম।

২৩ বছর বয়সী এই ইংলিশ মিডফিল্ডার উপহার দিলেন এক অনবদ্য পারফরম্যান্স, দুইটি দুর্দান্ত গোল, এক নিখুঁত অ্যাসিস্ট এবং পাসিং, নিয়ন্ত্রণ আর সিদ্ধান্তে যেন এক শিক্ষণীয় প্রদর্শনী। তার নৈপুণ্যে ৩-০ গোলের এই জয়ের পর পেলেন কোচ এঞ্জো মারেস্কার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা, 'এ ধরনের ম্যাচেই আমরা কোল পালমারকে আশা করি। আজও সে দেখিয়েছে, তার ভেতরে কী আছে।'

ম্যাচ প্রথম গোলটি আসে পালমারের শান্তস্বভাবী অথচ নিখুঁত ফিনিশ থেকে, দোন্নারুমার পাশ দিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় বল জড়িয়ে দেন জালে। কয়েক মিনিট পর আবার দৃশ্যপটে তিনি, লেভি কোলউইলের লং বল ধরে ফাঁকি দেন ভিতিনিয়াকে, এরপর একই কর্নারে বুদ্ধিদীপ্ত শটে দ্বিতীয় গোল। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগেই পালমার আরও একবার ম্যাচের গতি বদলে দেন, মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে দুর্দান্ত এক পাস বাড়ান জোয়াও পেদ্রোর দিকে, যিনি দোন্নারুমার মাথার ওপর দিয়ে চিপ করে স্কোরলাইন দাঁড় করান ৩-০।

সেই মুহূর্ত থেকে কোল পালমারকে থামানো আর সম্ভব হয়নি। তবু নিজস্ব বিনয়ী স্বভাব অনুযায়ী ম্যাচ শেষে তিনি নিজে নয়, কৃতিত্ব দেন সতীর্থ ও কোচকে। ফিফাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পালমার বলেন, 'সবাই আমাদের নিয়ে সন্দেহ করছিল। আমরা কিছু মনে করিনি, বরং এটাকেই অনুপ্রেরণা বানিয়েছি। মাঠে কঠোর পরিশ্রম করেছি। আমি মনে করি আমরা আজ দারুণ খেলেছি, বিশেষ করে কোচ। তার পরিকল্পনা দুর্দান্ত ছিল, আমরা সেটাই নিখুঁতভাবে বাস্তবায়ন করেছি।'

সতীর্থরাও প্রশংসায় ভাসিয়েছেন পালমারকে। গোলকিপার রবার্ট সানচেজ বলেন, 'কোল পালমার এখনকার সেরা খেলোয়াড়। এখন না হলেও আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যে সে বিশ্বের সেরা হবে। ও যা করে, তা যেন জাদু। সুযোগ পেলেই কাজে লাগায়। আজও দুই গোল করল, প্রায় হ্যাটট্রিক করেই ফেলেছিল। অসাধারণ।'

ফরাসি রাইটব্যাক মালো গুস্তো দিলেন পালমারের ড্রেসিংরুমের ভিন্ন এক চিত্র, 'ও একটু চুপচাপ, নিজের মতো থাকে। কিন্তু খুবই ভালো একজন মানুষ। কখন কথা বলতে হবে জানে, আবার কখন একটু মজা করে দলকে হালকা রাখতে হয় সেটাও জানে। আমাদের সবার সঙ্গে তার দারুণ সম্পর্ক। আজ সে আমাদের জন্য যা করেছে, তাতে সবাই এখন কোল পালমারকে চেনে।'