পুরোনো আইম্যাক ও অ্যাডবি প্রিমিয়ার প্রো-তে এডিট হয়েছে অস্কারের সেরা ছবি

By স্টার অনলাইন ডেস্ক
14 March 2023, 09:42 AM
UPDATED 14 March 2023, 16:02 PM

বর্তমান বিশ্বে যেখানে বিশাল বাজেটের সব চলচ্চিত্রগুলো বিপুল সংখ্যাক কলাকুলশীর পরিশ্রমে নির্মিত হয়ে বক্স অফিস মাতাচ্ছে, সেখানে এক বিরল কীর্তি গড়েছে এবারের ৯৫তম অস্কার আসরের সেরা ছবি 'এভরিথিক এভরিহোয়ার অল অ্যাট ওয়ানস'।

সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে প্যাশনেট কয়েকজন মানুষের কঠোর প্রচেষ্টায়।   

'এভরিথিং এভরিহোয়ার অল অ্যাট ওয়ানস' এমন একটি চলচ্চিত্র যা প্রমাণ করতে পেরেছে সৃজনশীলতা এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সীমাবদ্ধতা জয় করে সফল হওয়া সম্ভব।

ড্যানিয়েল কোয়ান এবং ড্যানিয়েল শেইনার্ট নামের ২ ভাই যৌথভাবে চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন। চলচ্চিত্রটিতে এমন একজন নারীর গল্প বলা হয়েছে, যিনি আবিষ্কার করেন, তার প্যারালাল ইউনিভার্সে প্রবেশের ক্ষমতা রয়েছে এবং বিশ্বকে বাঁচাতে হলে তাকে একটি মাল্টিভার্স নেভিগেট করতে হবে। সিনেমাটির উচ্চাভিলাষী পটভূমি এবং চকচকে ভিজ্যুয়াল দেখে বিশ্বাস করা কঠিন যে, এই চলচ্চিত্রটি মাত্র ৫-৭ জনের একটি দল এডিট করেছেন। 

19933_eeaaoeverythingeverywhereallatonce2_77528.jpg

চলচ্চিত্রটি ২০১৭ সালের একটি আইম্যাক এবং অ্যাডবি প্রিমিয়ার প্রো সফটওয়্যার দিয়ে সম্পাদনা করা হয়েছে। ইনডিপেনডেন্ট ফিল্ম এডিটর পল ছবির ফুটেজগুলো কেটে জোড়া দেন। যেটি সব মিলিয়ে ৭টি বিভাগে অস্কার জয় করেছে। 

এ ছাড়া তার ডু ইট ইয়রসেলফ (ডিআইওয়াই) ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট শিল্পীরা এমন কিছু তৈরি করেছেন যা সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে ব্লকবাস্টার চলচ্চিত্রগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বী।

এভরিথিং এভরিহোয়ার অল অ্যাট ওয়ানসে চলচ্চিত্রের ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট  অবিশ্বাস্য নয়। চলচ্চিত্রটিতে দর্শকদের একটি প্যারালার ইউনিভার্সের মধ্য দিয়ে বহির্জাগতিক প্রাণী থেকে শুরু করে আন্তঃমাত্রিক পোর্টালে ভ্রমণের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও সম্পূর্ণ কাজটি একটি বড় বাজেটের ভিএফএক্স স্টুডিওর কাজের মতো মনে হয়। তবে বাস্তবতা হলো এই, সিনেমাটি খুবই ছোট একটি গ্রুপের টিমওয়ার্কের ফল। যারা নিজে নিজেই বেশিরভাগ কাজ শিখেছেন।

তাহলে তারা কীভাবে এই কাজটা করল? তাদের মতে, কঠোর পরিশ্রম, কাজের সঙ্গে লেগে থাকা এবং তাদের শেখার পূর্ণ ইচ্ছা এর পেছনে ভূমিকা রেখেছে। টিমের অধিকাংশ সদস্য নিজ নিজ বাড়ি থেকে অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের কলাকৌশল নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন এবং নতুন নতুন দক্ষতা অর্জনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় ব্যয় করেছেন।

নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও তারা বিস্ময়কর সাফল্য অর্জনে সক্ষম হয়েছেন। চলচ্চিত্রটিতে জটিল থ্রি-ডি অ্যানিমেশন, কম্পোজিটিং ওয়ার্ক এবং বিস্তৃত পরিসরে প্র্যাকটিক্যাল ওয়ার্ক রয়েছে।

পরিশেষে বলা যায়, এভরিথিং এভরিহোয়ার অল অ্যাট ওয়ানস চলচ্চিত্রটি পরিশ্রম, সৃজনশীলতা এবং অল্প অল্প করে ডু ইট ইয়রসেলফ (ডিআইওয়াই) স্পিরিট দিয়ে কী অর্জন করা সম্ভব তার প্রমাণ। এটি এমন একটি চলচ্চিত্র যেটি তার সব সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে প্রমাণ করেছে; অনেক সময় বড় টিম বা বড় বাজেটের চেয়ে নিবেদিতপ্রাণ কর্মী ও উৎসাহী ব্যক্তিদের মাধ্যমে সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক কীর্তিগুলো গড়া যায়।