ঢাকা-বরিশাল রুটে ফিরছে প্যাডেল স্টিমার, জানুন ৫ বিষয়
শতবর্ষ প্রাচীন প্যাডেল স্টিমার 'পিএস মাহসুদ' আগামী মাসে ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে ফের চালু হতে যাচ্ছে।
এই স্টিমার বাংলাদেশের নদী ঐতিহ্য ও আধুনিক পর্যটনে এক অনন্য মেলবন্ধন ঘটাবে বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বহু বছর সংরক্ষণের পর স্টিমারটিতে আধুনিক ইঞ্জিন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও জিপিএস ন্যাভিগেশন সংযোজন করা হয়েছে। তবে, এর ঐতিহ্যবাহী নকশা রাখা হয়েছে আগের মতোই।
নতুন করে এই স্টিমার চালু হওয়ার আগে জেনে নিন এই স্টিমার সম্পর্কে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
উনবিংশ শতাব্দী থেকে শুরু হওয়া এক ঐতিহ্য
বঙ্গ অঞ্চলে স্টিম নৌযান চলাচল শুরু হয় ১৮২০-এর দশকে। ব্রিটিশ কর্মকর্তারা এর সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু করেন সেই সময়ে।
দ্য ডেইলি স্টারের পূর্ববর্তী এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বরিশাল-খুলনা রুটে ১৮৮৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে প্যাডেল স্টিমার যুগের সূচনা হয়। পরবর্তীতে ১৯৫৮ সালে এর কার্যক্রম পাকিস্তান রিভার স্টিমার্সের অধীনে যায় এবং ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) অধীনে আসে।
নদী ইতিহাসের জীবন্ত নিদর্শন
এক শতাব্দীরও বেশি আগে নির্মিত 'পিএস মাহসুদ' ছিল 'রকেট স্টিমার' নামে পরিচিত ঐতিহাসিক নৌবহরের অংশ।
বিআইডব্লিউটিসির তথ্য অনুযায়ী, মহাসড়ক ও উড়োজাহাজ চলাচল সম্প্রসারণের আগে এই স্টিমারগুলোই যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের প্রধান মাধ্যম ছিল।
স্টিম ইঞ্জিন থেকে ডিজেলে
শুরুতে স্টিম ইঞ্জিন ও প্যাডেল চাকায় চালিত 'পিএস মাহসুদ' ১৯৯০ সালে ডিজেলচালিত ইঞ্জিনে রূপান্তরিত হয় বলে স্টিমারের কর্মীরা জানিয়েছেন।
১৯৬০-এর দশকের পর বেশিরভাগ প্যাডেল স্টিমার আধুনিকায়নের মাধ্যমে কার্যক্ষম রাখার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়, এই পরিবর্তন ছিল তারই অংশ।
পর্যটনের জন্য পুনরুজ্জীবিত ঐতিহ্য
গত ২৪ অক্টোবর সদরঘাট থেকে পরীক্ষামূরক চলাচলকালে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, স্টিমারটি এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আজ যান্ত্রিক ও ন্যাভিগেশন সক্ষমতা পরীক্ষা করার জন্য এর পরীক্ষামলক যাত্রা করা হলো।
স্টিমারটি আগামী ১৫ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে এবং এরপর থেকে প্রতি সপ্তাহে ঢাকা-বরিশাল রুটে নিয়মিত চলাচল করবে।
বৃহত্তর পুনরুদ্ধার পরিকল্পনার অংশ
বিআইডব্লিউটিসি ইতোমধ্যে অন্যান্য ঐতিহাসিক স্টিমার—যেমন: পিএস অস্ট্রিচ, পিএস লেপচা ও পিএস টার্ন—পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনা করেছে।
নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, নদী ঐতিহ্য সংরক্ষণের পাশাপাশি নদীনির্ভর পর্যটনের সুযোগ সম্প্রসারণ করা।