'ভেস্তে গেছে গাজার যুদ্ধবিরতি চুক্তি, বাকি জিম্মিদের ভাগ্য অনিশ্চিত'

By স্টার অনলাইন ডেস্ক 
18 March 2025, 05:26 AM
UPDATED 18 March 2025, 11:37 AM

গাজায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। ইতোমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ২২০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি। যার ফলে, কার্যত ভেস্তে গেছে দুই পক্ষের ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চুক্তি।

আজ মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট।

হামাসের বক্তব্য

হামাস জানিয়েছে, 'নেতানিয়াহু ও তার সরকার যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।'

ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস আরও জানায়, 'বাকি জিম্মিদের ভাগ্য এখন অনিশ্চিত'।

taijul islam
হামাস কর্মকর্তা ইজ্জাত আল রিশক। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

হামাস কর্মকর্তা ইজ্জাত আল-রিশক এক বিবৃতিতে জানান, '(বেনিয়ামিন) নেতানিয়াহু আবারও যুদ্ধ শুরুর মাধ্যমে জিম্মিদের বলিদান করেছেন এবং মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন।'

'গাজায় এই বিশ্বাসঘাতকতাপূর্ণ হামলার পরিণতির জন্য আমরা অপরাধী নেতানিয়াহু ও জায়নবাদি শত্রুকে পুরো দায় দিচ্ছি', সামাজিক মাধ্যম টেলিগ্রামের পোস্টে জানায় হামাস।

ইসরায়েলের বক্তব্য

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, হামাস এখনো গাজায় আটকে রাখা জিম্মিদের মুক্তি দিতে রাজি না হওয়া আবারও হামলা শুরু করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, 'ইসরায়েল এখন থেকে হামাসের বিরুদ্ধে আরও বড় আকারে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করবে।'

old-dhaka.jpg
গাজায় অভিযান চালাচ্ছে আইডিএফের সেনারা। ফাইল ছবি: রয়টার্স

প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাটজ এক বিবৃতিতে একই সুরে কথা বলেন। তিনি জানান, 'জিম্মিদের মুক্তি দিতে রাজি হয়নি হামাস। তারা এখনো আইডিএফের সেনা ও ইসরায়েলি সম্প্রদায়ের প্রতি হুমকি। (এ কারণে) আজ রাত থেকে আমরা আবারো গাজার যুদ্ধ শুরু করেছি।'

তিনি হুশিয়ারি দেন, শিগগির হামাস জিম্মিদের মুক্তি না দিলে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) নজিরবিহীন সহিংসতার সংগে হামলা চালাবে এবং 'গাজায় নরকের দরজা' খুলে দেওয়া হবে।

যে কারণে আবারও হামলা শুরু করল ইসরায়েল

গত ১৯ জানুয়ারি সম্মত হওয়া যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর আলোচনা কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্যর্থ হওয়ার পর ব্যাপক হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। এর আগে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বিক্ষিপ্তভাবে ড্রোন হামলা চালালেও এবারের ব্যাপক পরিসরে হামলা শুরু করেছে।

untitled_design_-_2023-08-27t105306.597.png
গাজা উপত্যকায় অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ছবি: এএফপি

হামাস জানিয়েছে, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির চুক্তি ভঙ্গ করেছে, যার ফলে গাজায় এখনো বন্দি থাকা ৫৯ জন জিম্মির ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

আইডিএফের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা রয়টার্সকে জানিয়েছে, যতদিন প্রয়োজন, গাজায় হামলা চলবে এবং তা শুধু বিমান হামলায় সীমাবদ্ধ থাকবে না। তারা জানান, আইডিএফ প্রস্তুত আছে এবং সমগ্র অঞ্চলজুড়ে তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে।

সামরিক কর্মকর্তারা জানান, হামাসের নেতৃবৃন্দ ও অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে।

নিহতের সংখ্যা বেড়েছে

শুরুতে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা অন্তত ২০০ জন নিহত হওয়ার কথা জানালেও সংখ্যাটি এখন ২২০ ছাড়িয়েছে।

trump-and-bin-salman.jpg
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মরদেহ। ছবি: রয়টার্স

গাজার সিভিল ডিফেন্স দপ্তরের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল এএফপিকে জানান, 'গাজা উপত্যকার বিভিন্ন হাসপাতালে ২২০ জনের মরদেহ নিয়ে আসা হয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই নারী, শিশু ও বয়স্ক মানুষ।'

তিনি জানান, এখনো ইসরায়েলের সামরিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যার ফলে বাস্তুচ্যুত মানুষকে আশ্রয় দেওয়া স্কুল ও শিবিরগুলোর কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে।