অবিলম্বে হামাসের নিরস্ত্রীকরণ-গাজা চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ বাস্তবায়নে আগ্রহী নেতানিয়াহু
অবিলম্বে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত গাজার যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার দ্বিতীয় পর্যায় বাস্তবায়নে আগ্রহী ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
নেতানিয়াহু ঘোষণা দেন, এ মাসেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি।
আজ রোববার এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
১০ অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিরতি চালু আছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়। এই হামলায় এক হাজার ২০০ জন নিহত হন এবং হামাসের হাতে জিম্মি হন ২৫০।
ওই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে সেদিনই ইসরায়েল গণহত্যামূলক পাল্টা হামলা শুরু করে।
সেই সংঘাত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলেছে। সংঘাত চলাকালে দুই দফায় যুদ্ধবিরতি ও ১০ অক্টোবর পরবর্তী যুদ্ধবিরতির মধ্যে হামাস ধাপে ধাপে জিম্মিদের মুক্তি দিয়েছে।
সর্বশেষ চুক্তির শর্ত মেনে ৪৭ জীবিত ও মৃত জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার অঙ্গীকার করেন হামাস।
এক ইসরায়েলি পুলিশ কর্মকর্তার মরদেহ ছাড়া বাকি সকল জীবিত জিম্মি ও মৃত জিম্মির মরদেহ ইতোমধ্যে ইসরায়েলের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে কি আছে
দ্বিতীয় ধাপের অন্যতম শর্ত হামাসের নিরস্ত্রীকরণ, গাজায় একটি অন্তর্বর্তীকালীন শাসক নিয়োগ এবং আন্তর্জাতিক 'স্থিতিশীলতা' বাহিনী মোতায়েন করা।
জেরুসালেমে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস-এর সঙ্গে বৈঠকের পর নেতানিয়াহু বলেন, 'আমরা আশা করছি খুব শিগগির (যুদ্ধবিরতির) দ্বিতীয় পর্যায় শুরু করতে পারব। আগের পর্যায়ের তুলনায় এতে জটিলতা আরও বেশি।'
তিনি আরও জানান, এ মাসেই তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার 'নানা সুযোগ' নিয়ে আলোচনা করবেন।
নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে জানানো হয়, গত সোমবার ফোন কলে নেতানিয়াহুকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
ইসরায়েলের পাশেই আছে জার্মানি
মে মাসে ক্ষমতা গ্রহণ করেন জার্মান নেতা। তিনি বরাবরই গাজায় ইসরায়েলের নিরবচ্ছিন্ন হামলার সমালোচনা করেছেন। ইসরায়েলি হামলায় ৭০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
বৈঠক পরবর্তী যৌথ সম্মেলনে মের্ৎস যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি জানান, জার্মানি গাজায় ত্রাণ পাঠাচ্ছে এবং পুনর্নির্মাণ প্রক্রিয়ায় অংশ নিচ্ছে।
ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র জার্মানি। তবে গাজার হামলা প্রসঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের সম্পর্ক প্রভাবিত হয়েছে।
এই সফরে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন মের্ৎস।
তিনি বলেন, 'জার্মানিকে অবশ্যই ইসরায়েলের অস্তিত্ব ও নিরাপত্তার রক্ষায় উদ্যোগী হতে হবে।'
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যাপক গণহত্যার কারণে ইসরায়েলকে সুরক্ষা দেওয়া 'জার্মানির ঐতিহাসিক দায়িত্ব', যোগ করেন মের্ৎস।
সংবাদ সম্মেলনে জার্মান নেতা বলেন, 'অবশ্যই সময়ে সময়ে ইসরায়েলের সমালোচনা করতে হবে। এটা জরুরি।'
তিনি বলেন, 'জার্মানি-ইসরায়েলের সম্পর্ক এটুকু সহ্য করে নিতে পারবে। তবে ইসরায়েল সরকারের সমালোচনাকে ইহুদিবিদ্বেষ দেখানোর উপকরণ হিসেবে অপব্যবহার করা যাবে না।'
মের্ৎস আবারও জানান, জার্মানি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় 'দুই রাষ্ট্র' সমাধানে বিশ্বাসী।
১০ অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিরতি চালু হলেও গাজা ইসরায়েলের হামলা বন্ধ হয়নি। ১১ অক্টোবর থেকেই বিচ্ছিন্নভাবে হামলা চালিয়ে আরও ৩৬০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে দেশটি।

