স্কুলছাত্রের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি, এনসিপি নেতাসহ আটক ২
রংপুরে এক স্কুলছাত্রের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক নেতাসহ দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। স্থানীয় লোকজন গতকাল মঙ্গলবার রাতে ওই দুজনকে ধরে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।
ঘটনাটি ঘটে গতকাল রাত ৮টার দিকে নগরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন পার্কের মোড় এলাকায়। আটক দুজন হলেন এনসিপির রংপুর মহানগর সমন্বয় কমিটির সদস্য রাগীব হাসনাইন (৩০) এবং রাকিবুল ইসলাম ওরফে তুষার (২৮)। রাকিবুল এর আগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বাসায় হামলা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় কাওছার একাডেমির সামনে দুই স্কুলছাত্রের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। খবর পেয়ে রাগীব হাসনাইন ও রাকিবুল ইসলাম তুষারসহ কয়েকজন মোটরসাইকেলে করে সেখানে যান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রত্যক্ষদর্শী চা-দোকানি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, একপর্যায়ে তুষার কোমর থেকে পিস্তল বের করে এক ছাত্রের মাথায় ঠেকিয়ে ধরেন। এ সময় আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তুষার ও রাগীবকে ধরে ফেলেন। বাকিরা পালিয়ে যান।
তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজাহান আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রের বাবা বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। ওই মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। রাগীবের কাছ থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।
রংপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ) তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, উদ্ধার করা অস্ত্রটি গুলি ছোড়ার মতো অবস্থায় আছে কি না, তা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। সেটি আগ্নেয়াস্ত্র প্রমাণিত হলে অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা হবে।
এদিকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ছাড়িয়ে নিতে রাতেই থানায় যান এনসিপির নেতারা। দলের মহানগর সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী আলাল উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, রাগীব আমাদের দলের সদস্য এবং রাকিবুল সমর্থক। রাকিবুলের ভাগনেকে মারধর করা হচ্ছে শুনে তারা সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু উত্তেজিত লোকজন মব তৈরি করে খেলনা পিস্তল দিয়ে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেয়। আমরা বিষয়টি জানতেই থানায় গিয়েছিলাম।
ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রের বাবা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার ছেলে প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফিরছিল। বন্ধুদের মধ্যে পুরোনো কোনো বিষয় নিয়ে ঝামেলা ছিল বলে শুনেছি। কিন্তু এনসিপির নেতাসহ কয়েকজন এক ছাত্রের পক্ষ নিয়ে আমার ছেলেকে মারধরের পর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দিয়েছে। স্থানীয় লোকজন সময়মতো ওদের না আটকালে বড় ক্ষতি হয়ে যেত।'