‘শুক্রবার না হলে অনেক বেশি মানুষ মারা যেতে পারত’

By স্টার অনলাইন রিপোর্ট
21 November 2025, 09:52 AM
UPDATED 21 November 2025, 17:05 PM

বংশালের কসাইটুলি এলাকার কেপি ঘোষ স্ট্রিটে নিত্যদিনই থাকে ব্যস্ততা। সরু গলির পাশে দুটি স্কুল, আর সড়কটিতেই রয়েছে মাংস বিক্রির জন্য পরিচিত 'বিসমিল্লাহ মাংসের দোকান'।

তবে আজ শুক্রবার সকালে সেই ব্যস্ততা ছিল তুলনামূলক কম। সড়কে ছিলেন কয়েকজন পথচারী। কিন্তু তাদের মধ্য থেকে তিনজন আর বেঁচে ফিরতে পারেননি। 

ভূমিকম্পের সময় আটতলা একটি ভবনের বারান্দার রেলিং নিচে ভেঙে পড়ে ঘটনাস্থলেই তারা নিহত হন। সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটের দিকে এই ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭।

দুপুরের দিকেও  ভবনের সামনে রক্তের দাগ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। সরেজমিনে দেখা যায়, পুলিশ দড়ি টেনে এলাকা ঘিরে রেখেছে। চারপাশে উৎসুক জনতার ভিড়, আর তাদের সরিয়ে দিতে চেষ্টা করছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। স্থানীয়দের চেহারায় ছিল আতঙ্কের ছাপ।
 
বিসমিল্লাহ মাংসের দোকানের মালিক নয়ন আহমেদ ঘটনার সময় তার দোকানে ছিলেন। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার দোকানে সবসময় ভিড় থাকে। এখানে ২০ জন লোক কাজ করে। আল্লাহ তাদের সবাইকে বাঁচিয়েছেন। দোকানের ওপরে একটি মোটা ত্রিপল ছিল। তাই উপর থেকে ধ্বংসাবশেষ পড়লেও তা ত্রিপলে আটকে যায়। মাত্র একজন সামান্য আহত হন।'

গলির প্রবেশপথেই মো. আলী আদনানের মুদির দোকান। তিনি বলেন, 'ভূমিকম্পের সময় আমি এবং আমার বড় ভাই দোকানের ভেতরে ছিলাম।'

'আমার ভাই পড়ে যায়, এবং তাকে ওঠাতে সাহায্য করার সময় হঠাৎ আমরা একটি বিকট শব্দ শুনতে পাই। আমি তাকে রাস্তার ধারে বসিয়ে সেখানে ছুটে যাই। গিয়ে দেখি রেলিং ভেঙে পথচারীদের মাথায় পড়েছে।'

স্থানীয় বাসিন্দা শাহীন হোসেন বলেন, ভবনটি প্রায় ২০ থেকে ২৫ বছরের পুরনো। 'এটি মূলত ছয়তলা ভবন ছিল, কিন্তু চার বছর আগে আরও দুটি তলা যুক্ত করা হয়েছিল,' বলেন তিনি। 'অষ্টম তলার নবনির্মিত বারান্দার রেলিংয়ের কিছু অংশ ধসে পড়েছে।'

আরেক বাসিন্দা মাসুমা আক্তার বলেন, 'শুক্রবার হওয়ায় এলাকায় ভিড় কম ছিল। আল্লাহ নিজ হাতে আমাদের বাঁচিয়েছেন। অন্য দিন হলে ১০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যেতে পারত।'