বাভুমা-হার্মার ঝলকে লো স্কোরিং থ্রিলারে ভারতকে হারিয়ে দিল দক্ষিণ আফ্রিকা
বল টার্ন করছে, আচমকা লাফিয়ে উঠছে, নিচুও হচ্ছে...ব্যাটারদের জন্য এমন মরণ ফাঁদে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে অপরাজিত অর্ধশতক করলেন টেম্বা বাভুমা। তার ব্যাটে পাওয়া লড়াইয়ের পুঁজি নিয়ে অফ স্পিনার সাইমন হার্মার হয়ে উঠলেন বিষাক্ত, তাকে যোগ্য সঙ্গত করলেন পেসার মার্কো ইয়ানসেন। ঘুর্ণি বলে উইকেট পেলেন কেশব মহারাজ, এইডেন মার্করামও। ইডেন গার্ডেনের ভরপুর গ্যালারিতে স্তব্ধ করে দুর্দান্ত জয় পেল দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৫ বছর পর ভারতের মাটিতে টেস্ট জিতল তারা।
রোববার কলকাতার ইডেন গার্ডেনে তিনদিনেই শেষ হলো প্রথম টেস্ট। যাতে ভারতকে ৩০ রানে হারিয়ে দুই টেস্ট সিরিজে এগিয়ে গেল টেম্বা বাভুমার দল। অথচ আগের দিনও ভারতের দিকেই হেলে ছিলো পাল্লা। বাভুমার দৃঢ়তা আর স্পিনারদের জ্বলে উঠার দিনে অবিস্মরণীয় জয় পেল সফরকারী দল। ভারতের লক্ষ্য ছিলো মাত্র ১২৪ রান। ওই রান তাড়ায় ৯৩ করতে পারে তারা। ৯ উইকেট পড়ার পরই শেষ হয়ে যায় খেলা। কারণ ঘাড়ের চোটে এই টেস্ট থেকে আগেই ছিটকে গিয়েছিলেন অধিনায়ক শুভমান গিল।
প্রথম ইনিংসে ৩০ রানে ৪ উইকেট নেওয়া অফ স্পিনার হার্মার দ্বিতীয় ইনিংসে ২১ রানে পান ৪ উইকেট দুই ইনিংস মিলিয়ে ৫১ রানে ৮ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরাও হয়েছেন তিনি।
ইডেনে দ্বিতীয় দিনে উইকেট পড়েছিল ১৫টি। চোটে সেদিন গিলকে হারালেও জেতার পথেই ছিলো ভারত। কারণ হাতে শেষ তিন উইকেট নিয়ে কেবল ৬৩ রানের লিড ছিলো প্রোটিয়াদের।
শেষ তিন উইকেট নিয়ে লড়াই চালাতে থাকেন বাভুমা। করবিন বশের সঙ্গে ৮ম উইকেটে আসে ৪৪ রান। করবিন ২৫ করে ফিরে গেলে সাইমন হার্মারকে নিয়ে আরও ১৮ রান যোগ করেন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক, পেরিয়ে যান ফিফটি। আরেক পাশে একের পর এক উইকেট পড়তে থাকে, বাকি সবাই ফিরে গেলেও বাভুমা ৫৫ রানে অপরাজিত রয়ে যান।
দক্ষিণ আফ্রিকা ১৫৩ রানে থামলে ভারতের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১২৪ রানের (প্রথম ইনিংসে ৩০ রানের লিডের ফলে)। ছোট পুঁজি নিয়ে দলকে স্বপ্নের মতন শুরু পাইয়ে দেন বাঁহাতি পেসার ইয়ানসেন। দুই ওপেনার যশভি জয়সওয়াল ও লোকেশ রাহুলকে তুলে নেন তিনি।
তৃতীয় উইকেটে ওয়াশিংটন সুন্দরের সঙ্গে ৩১ রান যোগ করার পর বাজে শটে আত্মাহুতি দেন ধ্রুব জুরেল। গিলের অনুপস্থিতিতে অধিনায়কত্ব করা পান্ত টিকতে পারেন ১৩ বল। মাত্র ২ রান করে তিনি বোলার হার্মারকেই ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন।
অভিজ্ঞ রবীন্দ্র জাদেজাকে দারুণ ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ করে জেতার আশা চওড়া করেন হার্মার। ওয়াশিংটন সুন্দরের লড়াই (৯২ বলে ৩১) ততক্ষণে থামিয়ে দিয়েছেন এইডেন মার্করাম। কুলদীপ যাদবকে তুলে চতুর্থ উইকেট পান হার্মার।
৭ম উইকেট পড়ার পর অক্ষর প্যাটেল কেশব মহারাজের ওভারে দুই ছয়, এক চারে জাগিয়ে তুলেছিলেন গ্যালারি। কিন্তু লাভ হয়নি। উঁচুতে উঠা তার ক্যাচ হাতে দারুণভাবে মুঠোয় জমিয়ে স্বাগতিকদের সব সম্ভাবনা মিইয়ে দেন বাভুমাই, পরের বলেই সিরাজকে আউট করে ম্যাচ শেষ করে দেন মহারাজ।