ইয়েমেনের রাজধানীতে ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত ২

By স্টার অনলাইন ডেস্ক
24 August 2025, 16:24 PM

ইয়েমেনের রাজধানী সানায় পরিকল্পিত বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এই হামলায় অন্তত ২ জন ইয়েমেনি নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

আজ রোববার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি ও জেরুজালেম পোস্ট।

ওই হামলায় ১০টিরও বেশি আকাশযানের ব্যবহার হয়েছে। এগুলো সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা ধরে উড়ে এসে, দুই হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সানায় ৩৫টি বোমা নিক্ষেপ করেছে।

জেরুজালেম পোস্ট জানায়, ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্য ছিল ইয়েমেনের প্রেসিডেন্সিয়াল কমপ্লেক্স, আসার ও হাজাজ বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র এবং হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণের সম্ভাব্য অবস্থান। 

ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণাধীন রাজধানী শহরের আকাশ একটি বিশাল 'অগ্নিগোলকের' আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে। এর পর চারিদিকে ঘন ও কালো ধোঁয়া দেখা যায়।

ইসরায়েল হামলার পরের সময়টাকে এভাবেই বর্ণনা করেছেন এএফপির সংবাদদাতা।

হুতিদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই হামলা দুই জন নিহত ও ৩৫ জন আহত হয়েছেন।

হুতিদের একজন নিরাপত্তা সূত্র এএফপিকে বলেন, আকাশপথে আসা হামলায় সানার কেন্দ্রে অবস্থিত পৌরসভা ভবন আক্রান্ত হয়। হুতিদের টিভি চ্যানেল আল-মাসিরাহ জানায়, নিহত দুই ব্যক্তি একটি তেল পরিশোধন কারখানায় ছিলেন।

চ্যানেলটি জানায়, সানা'র দক্ষিণে অবস্থিত একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রও আক্রান্ত হয়। গত রোববারও একই অবকাঠামো ইসরায়েলি হামলার শিকার হয়েছিল। 

এএফপি জানায়, ইয়েমেনের প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ সংলগ্ন এলাকা, দুইটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ও একটি তেল সংরক্ষণাগারে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, 'ইসরায়েল রাষ্ট্র ও দেশটির বেসামরিক জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জঙ্গি সংগঠন হুতির ধারাবাহিক আগ্রাসনের জবাবে এই হামলা করা হয়েছে।'

গত শুক্রবার দিনের শেষভাগে হুতিরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। দেশটির দাবি, হুতিদের মিসাইল খুব সম্ভবত "মধ্য আকাশে ছিন্নবিচ্ছিন্ন" হয়েছে। 

Yemen Sanaa Attack by Israel
সানায় হামলার পর ভবনের ওপর থেকে কালো ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। ছবি: এএফপি

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস হামলা চালিয়ে এক হাজার ২০০ মানুষকে হত্যা করে ও ২৫০ জনকে জিম্মি করে। ওই দিনই গাজায় গণহত্যামূলক পাল্টা হামলা শুরু করে। এখন পর্যন্ত এসব হামলায় ৬২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক মানুষ।

ওই যুদ্ধের শুরু থেকেই গাজাবাসীর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। সরাসরি ইসরায়েল স্থল হামলা না চালালেও ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়ে গেছে হুতিরা।

এর আগে ১৭ আগস্ট ইসরায়েল দাবি করে, তারা সানায় হুতিদের গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি অবকাঠামোয় হামলার দাবি জানায়। আল-মাসিরাহ জানায়, রাজধানীর হাজিজ বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইসরায়েলি বিবৃতি মতে, আজকের হামলার অন্যতম লক্ষ্য ছিল সেই হাজিজ বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র।

ইসরায়েলে হামলার পাশাপাশি লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে ইসরায়েল-সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক জাহাজের উদ্দেশে নিয়মিত হামলা চালায় হুতিরা।

চলতি মাসের শুরুতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাটজ জানান, 'ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পরিচালিত প্রতিটি হামলার মূল্য সুদে-আসলে ফেরত পাবে হুতিরা।'