ইরানের শীর্ষ বেসরকারি ব্যাংক ‘দেউলিয়া’, গ্রাহকের দায়িত্ব নিচ্ছে সরকার

By স্টার অনলাইন ডেস্ক
28 October 2025, 08:13 AM
UPDATED 28 October 2025, 18:55 PM

গ্রাহক, কার্যক্রমের ব্যাপ্তি ও সম্পদের দিক দিয়ে ইরানের সবচেয়ে বড় বেসরকারি ব্যাংকের অন্যতম আয়ানদেহ ব্যাংক। তা সত্ত্বেও, সম্প্রতি ব্যাংকটি নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করেছে। এ ঘটনার প্রেক্ষাপটে তাদের ব্যাংকিং লাইসেন্স বাতিলের নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

গতকাল সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা।

তবে গ্রাহকদের জন্য স্বস্তির বিষয় হলো, সরকারি ব্যাংক মিল্লির সঙ্গে আয়ানদেহ ব্যাংককে একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

গত বৃহস্পতিবার ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক ঘোষণায় জানায়, আয়ানদেহ ব্যাংকের সব কার্যক্রম বন্ধ হবে এবং এটি ব্যাংক মিল্লির সঙ্গে একীভূত হবে। আগামী রোববারের মধ্যে দেশজুড়ে স্থাপিত আয়ানদেহ ব্যাংকের সব শাখা ব্যাংক মিল্লির শাখায় রূপান্তরিত হবে।

Bank mille
ব্যাংক মিল্লির একটি শাখা। ছবি: এএফপি

গ্রাহকদের আশ্বস্ত করে বলা হয়, তাদের অ্যাকাউন্ট ও জমা রাখা অর্থ সুরক্ষিত থাকবে। পাশাপাশি, তাদের সঙ্গে আয়ানদেহ ব্যাংকের সব ধরনের চুক্তি ও সমঝোতায় কোনো পরিবর্তনও আসবে না।

প্রায় ১৩ বছর টানা কার্যক্রম চালালেও শুরু থেকেই ইরানের এক ধনী পরিবারের মালিকানাধীন আয়ানদেহ ব্যাংকের কার্যক্রমকে ঘিরে ছিল সন্দেহের ঘেরাটোপ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেশ কয়েকবার এসব উদ্যোগে বাধ সেধেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ব্যাংকটি বছরের পর বছর লোকসান দিতে থাকে, যা সার্বিকভাবে ইরানের সামষ্টিক অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলেছে।

যেভাবে ঘনীভূত হলো সংকট

২০১০ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরানের আর্থিক খাত দুর্নীতি ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার নজরদারির অভাবে জর্জরিত হয়।

পশ্চিমা বিশ্বের ভ্রুকুটিকে উপেক্ষা করে পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ায় দেশটির বিরুদ্ধে জাতিসংঘ নানান অর্থনৈতিক বিধিনিষেধ আরোপ করে। এসব বিধিনিষেধের কারণে সে সময় দেশটির অর্থনীতি বেশ দুর্বল হয়ে পড়ে।

২০১৩ সালে তাত ব্যাংকের সঙ্গে দুই সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান সালেহিন ক্রেডিট ইনস্টিটিউশন ও আতি ক্রেডিট ইনস্টিটিউশনের একীভূতকরণের মাধ্যমে আয়ানদেহ ব্যাংকের যাত্রা শুরু হয়।

ইরানের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের অন্যতম আলি আনসারি (৬৩) আয়ানদেহ ও তাত ব্যাংকের মালিক।

Ayandeh
আয়ানদেহ ব্যাংকের একটি শাখা। ফাইল ছবি: এএফপি

দুই বছর আগে আয়ানদেহ ব্যাংক বড় আকারে লোকসানের মুখে পড়লে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিশেষ ব্যবস্থা নেয়। প্রতিষ্ঠানটির ৬০ শতাংশেরও বেশি স্টকের মালিকদের ভোটাধিকার বাতিল করা হয় এবং তা অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেওয়া হয়।

কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি।

সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে বারবার ঋণ নিতে থাকে আয়ানদেহ। এভাবেই এক সময় দেউলিয়া হয়ে পরে আয়ানদেহ। কার্যক্রম বন্ধের সময় ব্যাংকটির কাছে সরকারের পাওনা ছিল প্রায় ৪ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার।