দীর্ঘ ৮৩ ইনিংস পর সেঞ্চুরি পেয়ে বাবরের যত কীর্তি
অন্ধকার পেরিয়ে আলোর দিশা পেলেন বাবর আজম। দীর্ঘ ৮৩ ইনিংস ও ৮০৭ দিন পর অবশেষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন তারকা ব্যাটার। তার খরা কাটানোর দিনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয় নিশ্চিত করল পাকিস্তান।
শুক্রবার রাওয়ালপিন্ডিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাবরের নৈপুণ্যে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে জিতেছে স্বাগতিকরা। টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ উইকেটে ২৮৮ রান করে লঙ্কানরা। জবাবে ১০ বল হাতে রেখে মাত্র ২ উইকেট খুইয়ে লক্ষ্যে পৌঁছায় পাকিস্তান।
সাবলীল ব্যাটিংয়ে ১১৯ বল মোকাবিলায় বাবর করেন অপরাজিত ১০২ রান। তিন নম্বরে নেমে আটটি চারে সাজানো ইনিংসে ম্যাচসেরার পুরস্কারও জেতেন তিনি। ৬৮ বলে ফিফটি ছুঁয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ১১৫ বলে।
প্রমোদ মাদুশানের করা ইনিংসের ৪৮তম ওভারের প্রথম বলে শেষ হয় বাবরের দীর্ঘ অপেক্ষার পালা। পুল করে লেগ সাইডে খেলে সিঙ্গেল নিয়ে তিন অঙ্কে পা রাখেন তিনি। গ্যালারি আর পাকিস্তানের ড্রেসিংরুমে তখন বয়ে যায় আনন্দের বন্যা। সেঞ্চুরি স্পর্শের পর মুখে হাসি নিয়ে কিছুক্ষণ হাঁটু গেঁড়ে বসে থাকেন বাবর, আর ব্যাট উঁচিয়ে ধরার পর দেন সিজদাহ।
এই ম্যাচের আগে ৩১ বছর বয়সী বাবরের সবশেষ সেঞ্চুরিটিও ছিল ওয়ানডেতে, মুলতানে ২০২৩ সালের ৩০ আগস্ট নেপালের বিপক্ষে। এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বে ১৩১ বলে ১৫১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন পাকিস্তানের তৎকালীন অধিনায়ক।
৮৩ ইনিংস ও ৮০৭ দিন পর সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে যত কীর্তি গড়লেন বাবর:
* ওয়ানডেতে পাকিস্তানের হয়ে সাঈদ আনোয়ারের সর্বোচ্চ ২০টি সেঞ্চুরির রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন বাবর। সেজন্য তার লেগেছে ১৩৬ ইনিংস। সাঈদের খেলতে হয়েছে ২৪৪ ইনিংস।
* ৫০ ওভারের ক্রিকেটের ইতিহাসে বাবরের চেয়ে কম ইনিংসে ২০ সেঞ্চুরি করতে পেরেছেন কেবল দুজন। তারা হলেন ভারতের বিরাট কোহলি (১৩৩ ইনিংস) ও দক্ষিণ আফ্রিকার হাশিম আমলা (১০৮ ইনিংস)।
* দেশের মাঠে বাবরের ওয়ানডে সেঞ্চুরি হলো আটটি, যা পাকিস্তানের পক্ষে রেকর্ড। মোহাম্মদ ইউসুফকে (সাতটি) ছাড়িয়ে এককভাবে চূড়ায় উঠেছেন তিনি।
* সব সংস্করণ মিলিয়ে ৩৭২ ইনিংসে বাবরের এটি ৩২তম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি, যা পাকিস্তানের জার্সিতে চতুর্থ সর্বোচ্চ। তার উপরে আছেন ইনজামাম উল হক (৫৪৭ ইনিংসে ৩৫ সেঞ্চুরি), ইউসুফ (৪২৬ ইনিংসে ৩৯ সেঞ্চুরি) ও ইউনুস খান (৪৯১ ইনিংসে ৪১ সেঞ্চুরি)।
ম্যাচের পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বাবর বলেছেন, 'আমি সব সময় নিজের ওপর ও নিজের কঠোর পরিশ্রমের ওপর বিশ্বাস রাখতে চেয়েছি। ভালো শুরু পেলেও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছিলাম না। ভুল সময়ে আউট হয়ে যাচ্ছিলাম। তারপরও আমি নিজের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করে গিয়েছি।'