‘যেটা হয়েছে, ক্রিকেটের জন্য ভালো না’
সিরিজ শুরুর আগের দিন দল নির্বাচন নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন অধিনায়ক লিটন দাস। তাকে না জানিয়ে শামীম হোসেন পাটোয়ারিকে বাদ দেওয়া হয়েছিল বলে বিতর্ক সামনে আনেন তিনি। ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপুও দেন পাল্টা জবাব। বিরল এই সংবাদ সম্মেলনের পর দলের ভেতর-বাইরে তৈরি হয় অস্বস্তি। তবে পিছিয়ে থেকেও সিরিজ জেতার পর বাংলাদেশ দল এখন সুখী পরিবার। লিটন জানালেন, মুহূর্তের উত্তেজনায় দুদিক থেকেই হয়েছে ভুল, যা মিটমাট করে নিয়েছেন তারা।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুটির দলে শামীমকে রাখা হয়নি। নেওয়া হয়েছিল মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে। লিটনের জোর আপত্তি ছিল এই সিদ্ধান্তে। কথার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নির্বাচকদের সঙ্গে তার মতবিরোধ নিয়ে আসেন প্রকাশ্যে। এমনকি সংবাদ সম্মেলন শেষে আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত নেতৃত্বে থাকবেন কিনা তা নিয়েও অনিশ্চয়তা প্রকাশ করেছিলেন ডানহাতি ব্যাটার।
শুধু নির্বাচক প্যানেল না, লিটনের ইঙ্গিত ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) দিকেও। বোর্ড থেকে নাকি তাকে বলা হয়েছিল, যে দল দেওয়া হবে, তা নিয়েই খেলতে হবে। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে প্রথম ম্যাচে হেরেও যায় বাংলাদেশ। যদিও ঘুরে দাঁড়িয়ে পরের দুই ম্যাচ জেতায় স্বস্তি ফিরেছে।
মঙ্গলবার চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে ৮ উইকেটের জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করার পর সংবাদ সম্মেলনে এসে এক সপ্তাহ আগের প্রসঙ্গে ফিরতে হয় লিটনকে। সেই পরিস্থিতি যে দেশের ক্রিকেটের জন্য আদর্শ কিছু ছিল না তা স্বীকার করে নেন তিনি, 'দেখুন, হিট অব দ্য মোমেন্টে অনেক কিছু হয়েছে, দুই দিক থেকেই হয়েছে। কিন্তু যে জিনিসটা হয়েছে, সেটা ক্রিকেটের জন্য ভালো না। পরবর্তী সময় থেকে এই জিনিসগুলো হবে না এবং এরপর আমরা সুন্দর করে বসে কথা বলেছি। এটা ভালো একটা বিষয় ছিল।'
তৃতীয় টি-টোয়েন্টির আগে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ ছুটে আসেন চট্টগ্রামে। টিম হোটেলেই আলোচনায় বসেন অধিনায়ক লিটন ও কোচ ফিল সিমন্সের সঙ্গে। এই আলোচনার পরই সবকিছু স্বাভাবিক হয়েছে বলে জানান লিটন।
এক সপ্তাহ আগের সেই সংবাদ সম্মেলন শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বিশ্বকাপে অধিনায়কত্ব নিয়েও অনিশ্চয়তার সুর ছিল লিটনের কন্ঠে। আপাতত সেই চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসার কথাও স্পষ্ট করেন তিনি, 'আমি জানি না, এই কথাটা কেন আসছে। আমি তো সংবাদ সম্মেলনে বলিনি। না, না, এরকম কোনো কিছু না। এটা এমন একটা কাজ যা কোনো ক্রিকেট প্লেয়ারই করবে না (অধিনায়কত্ব এই সময়ে ছেড়ে দেওয়া)। ইনফ্যাক্ট, আমিও করব না। এতদিন ধরে একটা টিমকে একটা জায়গা থেকে টেনেছি, এই জায়গায় নিয়েছি। টিম গোছানো হয়েছে। আর প্রত্যেকটা প্লেয়ারের একটা স্বপ্ন থাকে ওয়ার্ল্ড কাপ খেলার। ওই জায়গা থেকে বলব যে, কখনোই এমন কিছু হবে না।'
আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চে যৌথভাবে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের আর কোনো আন্তর্জাতিক সিরিজ নেই। মাঝের সময়টায় বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা ব্যস্ত থাকবেন বিপিএলে।