কীভাবে ভারতের দুর্বলতা কাজে লাগাবে বাংলাদেশ, জানালেন শমিত
বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত চারটি ম্যাচ খেললেও জয়ের দেখা পাননি শমিত সোম। দুটি হয়েছে ড্র, বাকি দুটিতে হার। ভারতের বিপক্ষে আসন্ন ম্যাচ দিয়ে সেই অধরা স্বাদ পেতে আত্মবিশ্বাসী রয়েছেন তিনি। প্রতিপক্ষের দুর্বলতা কীভাবে তারা কাজে লাগাবেন, সেই ধারণাও দিলেন কানাডা প্রবাসী মিডফিল্ডার।
আগামী মঙ্গলবার এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে ভারতের মুখোমুখি হবে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত আটটায়।
বাংলাদেশের জার্সিতে কাঙ্ক্ষিত প্রথম জয়ের খোঁজে মরিয়া শমিত। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ সামনে রেখে শনিবার গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, মাঠে সব বিভাগেই দাপট দেখাতে তারা তৈরি, 'মিডফিল্ডের নিয়ন্ত্রণ রাখার ব্যাপারে আমরা আত্মবিশ্বাসী। আমি মনে করি, পুরো দল— গোলকিপার, ডিফেন্স, মিডফিল্ড, স্ট্রাইকিং সব পজিশনের খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস আছে যে, আমরা ম্যাচটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব, জিততে পারব। বিগত ম্যাচগুলোতে আমাদের পারফরম্যান্স ভালো হয়েছে, কিন্তু জয়টা পাচ্ছি না। জয়টা আমাদের পাওয়া উচিত। আশা করি, আমরা এবার সেটা পাব।'
বাংলাদেশ দল শেষবার ভারতকে হারিয়েছিল ২২ বছর আগে। ২০০৩ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে ২-১ গোলে জিতেছিল তারা। শমিত মনে করছেন, সেই দীর্ঘ খরা কাটাতে এবার কী কী করা দরকার তা তাদের জানা আছে, 'ভারত ভালো দল, কিন্তু তাদেরও দুর্বলতা আছে। ওদের মিডফিল্ড লাইন ও ডিফেন্স লাইনের মাঝে ফাঁক থাকে, জায়গা থাকতে পারে। আপনারা দেখেছেন, নেপাল যেভাবে ডিফেন্ড করেছে, ভারত মনে হয় এত ভালোভাবে ডিফেন্ড করতে পারবে না, স্ট্রাকচার ওইভাবে রাখতে পারবে না। আমরা ওই জায়গাতে সুযোগটা নিতে পারব।'
দুই দেশের মধ্যকার তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ মনোভাব নিয়ে তার ভাষ্য, 'এই ম্যাচটার অনেক অর্থ আছে, তাই না? যে দ্বৈরথটা আমাদের মধ্যে আছে, ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে, কিন্তু আমরা প্রস্তুত থাকব। আশা করি, আমরা জিততে পারব। আমরা ভালো খেলতে পারি, ভালো পারফরম্যান্স দিতে পারি। যে জয়টা খুঁজছি আমরা, এই মঙ্গলবারের ম্যাচে সেটা আশা করি পাব।'
সাম্প্রতিক সময়ে শেষ মুহূর্তে গোল হজম করার বাজে অভ্যাস পেয়ে বসেছে বাংলাদেশকে। যার খেসারত হিসেবে হাভিয়ের কাবরেরার দল গত মাসে বাছাইয়ের ম্যাচে ঘরের মাঠে ৪-৩ গোলে হেরে যায় হংকংয়ের কাছে। আর সম্প্রতি জাতীয় স্টেডিয়ামেই আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে নেপালের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করে সম্ভাব্য জয় হাতছাড়া করে।
মনোযোগের ঘাটতির কারণেই বারবার এমনটা ঘটছে বলে মত শমিতের। পাশাপাশি ভাগ্যকেও দুষছেন তিনি, 'ফুটবলে এমন হয় (শেষদিকে মনোযোগ হারানো), তাই না? আমরা কেবল ভাগ্যেকে পক্ষে পাচ্ছি না। এমনকি নেপালের বিপক্ষে ম্যাচে (সমতাসূচক গোলের আগে) ওরা যে কর্নারটা পেয়েছিল, ওইটা আসলে মনে হয় অফসাইডও ছিল, তাই না? কিন্তু ফুটবলে এগুলো হয়। জানি না, কী কারণে আমরা মনোযোগ হারাচ্ছি, কিন্তু আশা করি, ভাগ্যকে সামনে পাশে পাব, মনোযোগ হারাব না এবং আমরা যেন ওভাবে গোল হজম না করি। মূল বিষয় হলো, আমাদের মনোযোগ ধরে রাখতে হবে শেষ বাঁশি বাজার আগ পর্যন্ত।'
প্রবাসী ফুটবলারদের আগমন সত্ত্বেও বাংলাদেশ দল কাঙ্ক্ষিত ফল না পাওয়ায় বিস্তর সমালোচনা চলছে কোচ কাবরেরার। তবে শমিতর ভাবনা ভিন্ন, 'আমরা কোচকে বিশ্বাস করি। আমরা যদি কোচের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারি, আমরা জিততে পারব। যে গোলগুলো খাচ্ছি, ওগুলো কোচিংয়ের কোনো সমস্যা না। এগুলো ব্যক্তিগত ভুল, আবার দলীয় ভুলও হয়।'